• ‘ধুর পাচারের’ খরচ বেড়েছে সাত-আট গুণ, এদেশে আসতে পিছপা নন বাংলাদেশিরা
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: বনগাঁয় বাড়ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ। গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে এদেশে আসার সময় কিংবা ওই দেশে ফেরার সময় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছে পুলিসের হাতে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশের খরচও বেড়েছে। তবুও কেন বাড়ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ? এই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে প্রশাসনের অফিসার থেকে সমাজকর্মীদের।


    বনগাঁ শহরে ‘ধুর সিন্ডিকেট’ বা দালালচক্র সক্রিয়। মহকুমার বেশ কিছু এলাকা এঁদের স্বর্গরাজ্য। চোরাপথে বাংলাদেশিদের এদেশে এনে সেইসব জায়গায় লুকিয়ে রাখেন দালালরা। সুযোগ বুঝে সেখান থেকে বিভিন্ন যানবাহনে বাংলাদেশিদের অন্যত্র পাঠানো হয়। বনগাঁ মহকুমার সীমান্তের বেশ কিছু এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। সেই সব এলাকাকেই বেছে নেন দালালরা। বাগদা থানা এলাকায় রণঘাট সীমান্ত এর মধ্যে অন্যতম। সেখানে বেশ কিছুটা এলাকা জলপথ। নেই কাঁটাতারের বেড়া। নদীতে অল্প জল থাকায় অনায়াসেই জল পেরিয়ে ভারতে চলে আসেন বাংলাদেশিরা। এরপর ফাঁকা মাঠের মধ্যে দিয়ে বনেশ্বরপুর, ভবানীপুর, চকবেড়িয়া প্রভৃতি এলাকায় চলে আসেন তাঁরা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বাগদার নলডুগাড়ি, চরমণ্ডল প্রভৃতি এলাকায় অনেক দালালের বাস। বাংলাদেশিরা এইসব এলাকায় দালালদের আস্তানায় থেকে যান বেশ কিছুদিন।


    দালালরা বাংলাদেশি মহিলাদের কখনও কখনও নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন। অনেক বাংলাদেশি মহিলা বা পুরুষ আবার এদেশে এসে বিয়েও করেন। পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে এদেশের পরিচয়পত্র তৈরি করে নেন। বনগাঁর আংরাইল, ঘুনারমাঠ, সুটিয়া প্রভৃতি এলাকাও অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গরাজ্য। এইসব এলাকা দিয়েও বাংলাদেশিরা চোরাপথে এদেশে চলে আসেন।


    অনুপ্রবেশের আরও একটা কারণ ঘন কুয়াশা। শীতে ঘন কুয়াশার সুযোগে অনুপ্রবেশ ঘটছে সীমান্তে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ‘ধুর পাচার’-এর খরচ অনেকটাই বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগে ৮০০-১২০০ টাকায় সীমান্ত পারাপার করা যেত। বর্তমান সময়ে সেই অঙ্ক প্রায় সাত আট গুণ বেড়েছে। কিন্তু খরচ বাড়লেও এদেশে আসতে পিছু পা হন না বাংলাদেশিরা। সেই সুযোগে মোটা টাকা হাতিয়ে নেন দালালরা। দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক বাংলাদেশি মহিলাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়। এমনকী তাঁদের বিক্রি করা হয় নিষিদ্ধপল্লিতে। তবুও অনুপ্রবেশ কমছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)