• ফেসটাইম ব্যবহার করে সম্বলপুরে সোনা লুটের  পরিকল্পনা ও নির্দেশ পাঠিয়েছিল ‘জুয়েল থিফ’  
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রেসিডেন্সি জেলের সেলে বসে ‘জুয়েল থিফ’ গ্যাংস্টার সুবোধ সিং আই ফোনের ফেসটাইম ব্যবহার করে যোগাযোগ রাখছিল শাগরেদদের সঙ্গে। বিহার এবং ওড়িশা পুলিসের এসটিএফের তদন্তকারীরা বলছেন, সম্বলপুরে স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ৩০ কেজি সোনা লুটের পরিকল্পনা প্রেসিডেন্সি জেলে বসেই করেছিল সুবোধ সিং। অপারেশনের পর কোথায় কীভাবে লুটের মাল পৌঁছে দিতে হবে, সে নির্দেশও ফেসটাইমের মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। বেউর জেলে বন্দি সুবোধের শাগরেদ পাল্লু সিংকে জেরা করে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে ওড়িশা এবং বিহার পুলিসের যৌথ টিম। কিন্ত কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত প্রেসিডেন্সি জেলে সুবোধের কাছে আই ফোনটি কে পৌঁছে দিল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য কারাদপ্তর। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে বিহার এসটিএফ। এই মোবাইলটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বিহার পুলিসের তরফে রাজ্যের তদন্তকারীদের জানানো হয়েছে বলে খবর।


    সিআইডি তদন্তভার নেওয়ার পর জানতে পারে, বেউর জেলে থাকার সময় সেখানে বসেই সুবোধ ফোনে করত তার শাগরেদদের। জেলের ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভিওপি কলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা দাবি করত।  কোন স্বর্ণঋণদানকারী সংস্থায় অপারেশন হবে তার নির্দেশ দিত।  বেউর জেলের সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। তদন্তে উঠে আসে জেলের একাংশকে ম্যানেজ করে নিজের এই সাম্রাজ্য অটুট রেখেছিল এই গ্যাংস্টার। প্রেসিডেন্সিতে সে কাকে বা কাদের ‘ম্যানেজ’ করল, সেটাই এখন তদন্তকারীদের আতস কাঁচের নীচে। 


    ওড়িশার সম্বলপুরে স্বর্ণঋণদানকারী সংস্থায় লুটের তদন্তে নেমে জানা যায়, কাণ্ডে জড়িত যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কাছে ফোন এসেছে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেল থেকে। সেই সূত্র ধরে সুবোধের নতুন নম্বর পান তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের কাছে তথ্যের ঝাঁপি খুলে দেয় পাল্লু। সে অফিসারদের জানিয়েছে, সুবোধ তার গ্যাংয়ের সদস্যদের মাথাদের সকলকেই আইফোন দিয়েছে বেউরে থাকার সময়ে। বাংলায় রাজ্যে আসার পর বারাকপুর জেল ঘুরে প্রেসিডেন্সিতে ঠাঁই নেওয়া মাত্রই সুবোধের কাছে পৌঁছেছে আইফোন। ওড়িশা-বিহারের যৌথ তদন্তকারী টিমের কথায়, কারও মদত ভিন্ন সেলে মোবাইল ঢোকানো ও তার ব্যবহার সহজ নয়। বেউরের মতোই প্রেসিডেন্সিতে গ্যাংস্টার জমিয়ে বসেছে, সেই বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। এখানে বসেই সে বিহারসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে ছড়িয়ে থাকা শাগরেদদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তার প্রমাণ হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। এই বিষয়ে সতর্ক করা হয় এ রাজ্যের পুলিসকে। তারপরই এই নিয়ে পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি জেলে যে  সংস্থার ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেট কলের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইছে বিহার পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)