• এখনও কাঠের সেতুই ভরসা মগরার  পাম্প কলোনির বাসিন্দাদের, ক্ষোভ
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ২০২৫ সালেও কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করতে হয় হুগলির জয়পুর পাম্প কলোনির বাসিন্দাদের। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ তুঙ্গে। মগরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার জন্য পাম্প কলোনি গড়ে তোলা হয়েছিল। অথচ, এত বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার তাঁদের সুবিধার কথা ভাবেনি। যাতায়াতের পাশাপাশি বাড়িঘর তৈরি করতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। পাকা সেতু না থাকায় গ্রামে কোনও বড় গাড়ি ঢুকতে পারে না। ফলে, বাড়ি তৈরির উপকরণ আনা থেকে শুরু করে চাষের জমির জন্য ট্রাক্টর আনতেও অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় গ্রামবাসীদের। এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী সেতুর দাবিতে বাসিন্দারা সরব হতে শুরু করেছেন।


    স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল দত্ত বলেন, পঞ্চাশ বছর ধরে আমরা এই অবস্থায় বাস করছি। কাঠের সেতু পেরিয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। আগে অবস্থা আরও খারাপ ছিল। তখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হতো। ২০২২ সালে বাঁশের পরিবর্তে কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। কিন্তু স্থায়ী কংক্রিটের সেতু তৈরির কথা কেউ ভাবেনি। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে আমরা আধুনিক জীবনযাত্রার কথা ভাবতে পারি না। স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর সরকার বলেন, কুন্তী নদীর উপর এই সেতুই আমাদের অর্ধশতাব্দীর ভরসা। এই সেতু বেশি ভার বহন করতে পারে না। তাই চাষের জন্য ট্রাক্টর বা বাড়ি তৈরির জন্য ইট আনতে হলে ঘুরপথে নিয়ে আসতে হয়। এতে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। যদিও মগরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিক বলেন, গ্রামবাসীদের সমস্যার কথা ভেবেই বাঁশের সাঁকোর বদলে কাঠের সেতু করা হয়েছে। স্থায়ী সেতুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেচদপ্তর মাটি পরীক্ষাও করেছে। আশা করি, বাসিন্দাদের বেশিদিন আর এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের জয়পুর গ্রাম মূলত কৃষিনির্ভর। চাষের জমির শেষে এক সময় সরকারি উদ্যোগে একটি ছোট মহল্লা গড়ে তোলা হয়েছিল। এটাই পাম্প কলোনি হিসেবে চিহ্নিত। আসলে চাষের জমিতে সরকারি সেচব্যবস্থার যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাওয়া রুখতেই এখানে এই কলোনি গড়া হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সেই কলোনি একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই গ্রামের বাসিন্দারা মগরা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারেন না। তাঁদের বনেরমাঠ গ্রামের মধ্যে দিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে আসতে হয়। বনেরমাঠে যেতে হয় কাঠের সেতু দিয়ে। এটি যাতায়াতের পথ হলেও গ্রামবাসীদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে সমস্যা তৈরি করছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)