কমছে দূরত্ব! রাজ্যপালের ভাষণে শুরু রাজ্য বাজেট অধিবেশন, ভাবনা অধ্যক্ষের
প্রতিদিন | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: সংঘাত পর্ব সরিয়ে আরও একবার সৌজন্য। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে আমন্ত্রণ করার ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ ফেব্রুয়ারি বসছে বাজেট অধিবেশন। রাজ্য বাজেট পেশ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। এই অধিবেশনই প্রথাগতভাবে রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে শুরু করতে চাইছে রাজ্য বিধানসভা। অধ্যক্ষের কথায়, “রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তাভাবনা আমরা রেখেছি।”
এই প্রক্রিয়া নতুন কিছু নয়। বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। সেই ভাষণের উপর চলে আলোচনা। কিন্তু গত বাজেট অধিবেশনের আগে রাজ্য- রাজ্যপাল সংঘাত চরম আকার নিয়েছিল। রাজ্যপাল নানা ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে নিশানা করছিলেন। পালটা জবাবের মুখেও পড়তে হচ্ছিল তাঁকে। তিক্ততা এতটাই বেড়ে যায় যে, তাঁর মুখোমুখিও হতে চাইছিল না সরকারি দল। বিধানসভাতেও তার প্রভাব পড়ে। রাজ্যপালকে ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু করা হয় পরিষদীয় আইনের বলে। দস্তুর হল, বাজেট অধিবেশন রাজ্যপালই ডেকে থাকেন। তা পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু সংঘাত পর্ব এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, ২০২৩-এর শীতকালীন অধিবেশন শেষে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণাই করেননি অধ্যক্ষ। ফলে নতুন করে বাজেট অধিবেশন শুরুর জন্য রাজ্যপালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়নি রাজ্যকে। নজিরবিহীনভাবে রাজ্যপালকে ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।
তার পর গত এক বছরে পরিস্থিতির অনেক বদল ঘটে। রাজ্যের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন তিনি, এই অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে কার্যত সংঘাত পর্বে ইতি টানতে বাধ্য হন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এক সুরে কাজ করতে রাজভবন বদ্ধপরিকর বলে বার্তা দেন। রাজ্যও কিছুটা নরম হয়। শেষ বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদের শপথ পড়ানোর রাজ্যপালের দাবি মেনে তাঁকে বিধানসভায় আমন্ত্রণও জানানো হয়। এর মধ্যেই ২৬ জানুয়ারি রাজভবনে রাজ্য পুলিশের ব্যান্ডকে ঢুকতে না দেওয়ায় আরেক বেনিয়মের চেহারা সামনে আসে। তার ফলও হাতেনাতে মেলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুদ্রমূর্তির সামনে রাজভবন কার্যত গুটিয়ে যায়। এর পরই অধ্যক্ষের মুখে রাজ্যপালকে বাজেট ভাষণে আমন্ত্রণের ভাবনা।
অধ্যক্ষ সেই সৌজন্যের কথা জানিয়েই বলেছেন, “ওঁকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব, যাতে বাজেট অধিবেশনের শুরুতে এসে আমাদের এখানে বক্তব্য রেখে যান। রীতি মেনে সেই বক্তব্যের উপর আলোচনা হবে। তারপর বাজেট পেশ হবে।” বিজেপি ও আইএসএফ, বিরোধী দুই দলের প্রতিনিধিকেই বিধানসভার অধিবেশন ও সর্বদলীয় বৈঠকে থাকার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন অধ্যক্ষ।