গোবিন্দ রায়: বহুতল নির্মাণের কারণে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে দেখা দিয়েছিল ফাটল। জল আদালতে গড়াতেই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও শেষরক্ষা হল না। মামলাকারী প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করল হাই কোর্ট।
ক্ষতিগ্রস্ত এক বাড়ির আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, কয়েকবছর আগে হুগলি শ্রীরামপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এস সি ঘোষ লেনের একটি বেসরকারি আবাসন নির্মাণ শুরু হয়। তারপরই পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। এলাকার প্রভাবশালী প্রোমোটার হওয়ার কারণে অনেকেই মুখ খুলতে চাননি। এলাকার বাসিন্দা দেবপ্রসাদ বসাকের বাড়িতেও ফাটল ধরে বলে অভিযোগ। শ্রীরামপুর পুরসভায় এবিষয়ে অভিযোগও জানান তিনি। কিন্তু পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। অবশেষে দেবপ্রসাদবাবু ২০২৩ সালে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি সিনহা পুরসভাকে সেই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় পুরসভা সেই নির্মাণ ভাঙতে পারেনি। এদিকে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে নির্মাণকারী সংস্থার কর্ণধার সন্তোষ চৌধুরী কলকাতা হাই কোর্টেরই দ্বারস্থ হন। বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের এজলাসে মামলাটি ওঠে।
শুনানিতে অভিযোগকারী পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার জানান, অবৈধ নির্মাণের নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শ্রীরামপুর পুরসভা সেই নির্মাণ অবৈধ মেনে নিলেও এখনও পর্যন্ত তা ভাঙা হয়নি। পাশাপাশি, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পুরসভা কোন স্বার্থে নির্মাণকারী সংস্থাকে অবৈধ নির্মাণের সমস্ত রকম সাহায্য করছে সেই প্রশ্নও করেন আইনজীবী। বিচারপতি চন্দ্র আগের নির্দেশ বহাল রেখে শ্রীরামপুর পুরসভাকে নির্দেশ দেন সাত দিনের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ অংশ ভেঙে ফেলতে হবে।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় নির্মাণকারী সংস্থা। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা উঠতেই নির্মাণকারী সংস্থা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানান। আদালতে তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারপতি ওই অবৈধ নির্মাণকারী সংস্থাকে এক লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানা করেন।