শ্বশুরকে বাবা বানিয়ে ভোটার কার্ডের আবেদন বাংলাদেশির
বর্তমান | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: শ্বশুরকে নিজের বাবা সাজিয়ে ভোটার কার্ড তৈরির চেষ্টা করছিল বাংলাদেশি যুবতী। বিডিও এনিয়ে গত ১১ জানুয়ারি হরিহরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই যুবতী। বৃহস্পতিবার যুবতীর শ্বশুরকে বাড়ি থেকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। ধৃতের নাম সইদুল ইসলাম। বাড়ি হরিহরপাড়ার স্বরূপপুর এলাকায়। তাকে এদিন বহরমপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই যুবতীর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট ও ভিসা করে বৈধ উপায়ে ভারতে এসেছিল বাংলাদেশি ওই যুবতী। সোশ্যাল মিডিয়ায় হরিহরপাড়ার এক যুবককে সঙ্গে তার আলাপ হয়। তারপর বিয়ে করে ওই যুবতী এখানে থাকতে শুরু করে। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারতীয় বাসিন্দা হওয়ার চেষ্টা করে সে। সেই জন্য ইলেক্টোরাল রোলে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ভোটার সার্ভিস পোর্টালে অনলাইন আবেদন করে। সেই আবেদনের সঙ্গে যে বার্থ সার্টিফিকেট ও আধার কার্ড দেওয়া হয় তা সম্পূর্ণ ভুয়ো।
অনলাইনে আবেদনের পর বিডিওর কাছে তার কপি জমা পড়ে। তারপর সেটি খতিয়ে দেখেন ব্লক অফিসের কর্মীরা। তাতে দেওয়া জন্ম শংসাপত্র ও আধার কার্ড ভুয়ো বলে জানতে পারেন কর্মীরা। তারপরই বিডিওকে বিষয়টি জানানো হয়। আবেদনের সঙ্গে দেওয়া শংসাপত্র হরিহরপাড়ার বিএমওএইচের কাছে পাঠানো হয়। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, ওই বার্থ সার্টিফিকেট তারা ইস্যু করেনি। এই তথ্য জানার পরেই হরিহরপাড়া বিডিওর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিস মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ঘটনার ১৯ দিন পর ওই যুবতীর শ্বশুরকে পুলিস গ্রেপ্তার করল। ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য শ্বশুরকে নিজের বাবা পরিচয় দিয়ে আবেদন জানিয়েছিল ওই যুবতী।
তবে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবতীর নামে ইতিমধ্যেই একটি আধার কার্ড বানিয়ে ফেলা হয়েছে। সেই আধার কার্ড এবং একটি জাল জন্ম শংসাপত্র দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন করে। হরিহরপাড়া ব্লকের স্বরূপপুর এলাকার নিজের শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা দিয়েই এই আবেদন করা হয়েছিল। বিডিও অভিযোগ জানাতেই পুলিস ওই বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই যুবতী গা ঢাকা দিয়েছে। বর্তমানে ওই যুবতী বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে বলেই অনুমান পুলিসের।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ভোটার লিস্টে নাম তোলার জন্য একটি আবেদন করা হয়। কিন্তু, যে জন্ম শংসাপত্র এবং আধার কার্ড দেওয়া হয়েছিল দু’টিই নকল। তাই বিডিও নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে থানায় অভিযোগ জানান। পুলিস তদন্ত করে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাসে হরিহরপাড়া থেকে আনসারুল্লা বাংলা টিমের দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপরেই এই জাল ভোটার কার্ডের আবেদন ঘিরে বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। অবশেষে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস তদন্ত শুরু করল।