• উপভোক্তাদের সঙ্গে চুক্তিপত্র করে আবাস প্রকল্পের টাকা হাতাতে সক্রিয় ভুয়ো সংস্থা
    বর্তমান | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে নিজের বাড়ি নিজে তৈরি করার প্রচার চালানো হচ্ছে। সরকার ও প্রাপকদের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি যাতে ঢুকে না পড়ে, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও মিডলম্যানদের দৌরাত্ম্য সামনে আসছে। নয়াগ্ৰাম ব্লকে এবার ভুয়ো সংস্থার বিরুদ্ধে বাংলার বাড়ি প্রাপকদের স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে প্রথম কিস্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। জেলা প্রশাসনের তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে।


    জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। প্রশাসনের তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রামে ২০ হাজার উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢুকে গিয়েছে। বাড়ি তৈরির জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। প্রাপকদের অনেকেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বিনপুর-২ ব্লকের ঘাগড়া এলাকায় এক প্রাপকের বাড়ির ভিত খোঁড়ার সময় জেলাশাসক স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। সরকার ও বাড়ি প্রাপকদের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি যাতে না ঢোকে, তা নিয়ে প্রচার চলছে। প্রকল্পে দূর্নীতি রোধে জেলা প্রশাসন এবার প্রথম থেকেই সতর্ক। যদিও বাড়ি তৈরিতে তৃতীয় পক্ষের ঢুকে পড়ার খবর সামনে এসেছে। নয়াগ্ৰাম ব্লকে এক ভুয়ো সংস্থার বিরুদ্ধে প্রাপকদের স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে প্রথম কিস্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। প্রশাসনিক মহলে তাই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সংস্থার স্ট্যাম্প পেপারে উল্লেখিত সংস্থার নাম এবিএস কনস্ট্রাকশন।  সংস্থার ঠিকানা বীরভূম জেলা উল্লেখ রয়েছে । চুক্তিপত্রের শর্তে বলা হয়েছে, ‘প্রথম পক্ষ একটি সরকারি বাড়ি পেয়েছেন। তিনি নিজের সমস্ত মেটিরিয়াল জোগাড় করে বাড়ি বানাতে অসমর্থ হওয়ার জন্য বাড়ি নির্মাণের দায়িত্ব দিচ্ছেন।’ চুক্তিপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, বাড়ি বানানোর সময় মেঝেতে যদি গর্ত থাকে, সেক্ষেত্রে বালি ও মাটি দিয়ে ভরাটের খরচ প্রথম পক্ষকে দিতে হবে। বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় পক্ষকে মোট ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। বাড়ি তৈরির শুরুতেই ৬০ হাজার ও অর্ধ নির্মাণের পর বাকি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দিলে বাড়ি তৈরি করা হবে না। বাড়ি তৈরি নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে তার দায়ভার দ্বিতীয় পক্ষের থাকবে না ও বাড়ি তৈরি করতে বাধ্য করা যাবে না। ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসে গিয়ে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়। লিখিত অভিযোগ পত্রে জেলাশাসককে জানানো হয়েছে, বাংলার আবাস যোজনার উপভোক্তাদের প্রদেয় টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে। নয়াগ্ৰামের বাসিন্দা জয়ন্ত পাত্র বলেন, বাংলার বাড়ি প্রাপক আদিবাসীদের ভুল বুঝিয়ে একটি চক্র স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে চুক্তি করছে। গরিব মানুষদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। টাকা দেওয়ার সঙ্গে বাড়ি তৈরির বিষয়েও প্রশাসনের নজর দরকার। তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল দত্ত বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পরেই ব্লকের বিডিও অফিস মারফত জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সহজ সরল আদিবাসী ও জনজাতি মানুষকে চুক্তির ফাঁদে ফেলে টাকা হাতি নেওয়ার চেষ্টা চলছে। চক্রটির সঙ্গে স্থানীয় কিছু মানুষ জড়িত আছে। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করুক । 
  • Link to this news (বর্তমান)