সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর সরকারি অনুমোদন নিয়ে অন্ধকারে কোর্ট!
বর্তমান | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ‘সবুজ সঙ্কেত’ মিললেও সিবিআই তা নিম্ন আদালতে সঠিক সময়ে জানায়নি। আর তাতেই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার আলিপুরের বিশেষ আদালতের বিচারক সুজিতকুমার ঝা সিবিআইয়ের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে শো‑কজ করেন। শুধু তাই নয়, বিচারক সিবিআইয়ের কৌঁসুলিকেও ভর্ৎসনা করেন তিনি। এই মামলার শুনানি চলাকালেই বিচারক বিষয়টি জানতে পেরে বলেন, ‘গত ২৭ জানুয়ারি রাজ্য সরকারের তরফে ওই অনুমোদন মিলেছিল। অথচ বিষয়টিতে নিম্ন আদালতকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হল!’
উত্তরে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বলেন, ‘২৭ জানুয়ারি অনুমোদন মিললেও তা পর্যবেক্ষণ করতে কিছুটা সময় লেগেছিল।’ এই কথা শুনে বিচারক বলেন, ‘পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, বিষয়টিতে নিম্ন আদালতকে পাশ কাটানোই হয়েছে! এতদিন এই বিষয়ে সরকারি অনুমোদন না মেলায় চার্জ গঠন করা যাচ্ছিল না। সেজন্য বিচার প্রক্রিয়া থমকেই ছিল। তাই বিষয়টি এই আদালতের নজরে আনা জরুরি ছিল।’ বিচারক উষ্মা প্রকাশসহ আরও বলেন, ‘আপনারা পুরো বিষয়টি লিখিত আকারে জানান। আমি আপনাদের শো‑কজ করছি।’
এদিকে, এই আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গত ২৯ নভেম্বর আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সন্দীপ ঘোষসহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। ওই মামলায় আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সরকারি কর্মী বলে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের অনুমোদন না আসায় মামলাটি শম্বুক গতিতে এগচ্ছিল। এদিকে, আজ, শুক্রবার অভিযুক্তদের হাতে চার্জশিটের প্রতিলিপি তুলে দেওয়ার কথা। আদালত সূত্রের খবর, আইনি প্রক্রিয়াটি শেষ হলেই এই মামলার চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হবে।
অন্যদিকে, এদিনই সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বদলি করা হয়। তিনি আর জি করে মাইক্রো বায়োলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বেলেঘাটা আইডিতেও তিনি ওই পদে থাকবেন।
এদিকে, অবসরের বয়স পেরনোর পরেও ৫ বছর ধরে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে থাকায় মানস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুনানির পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে মানস চক্রবর্তীকে পদত্যাগ করতে হবে, না-হলে আদালতই তাঁকে সরিয়ে দেবে। এছাড়া রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে নতুন একটি মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে।