পাসপোর্ট-আবেদনে জমা নথি আসল কি না, যাচাই করবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি
বর্তমান | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যে কাজ করার কথা মোদি সরকারের আরপিও অফিসের, রাজ্যের সুরক্ষায় সেই কাজই এবার করতে হচ্ছে পুলিসকে। ভুয়ো নথি দিয়ে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট পেয়েছেন। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে পদক্ষেপ করল পুলিস ডিরেক্টরেট। পাসপোর্ট আবেদনকারীর জমা পড়া নথি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর থেকে বাধ্যতামূলকভাবে যাচাই করতে হবে। সম্প্রতি এমনই নির্দেশ পুলিস ডিরেক্টরেট থেকে সমস্ত জেলায় গিয়েছে বলে খবর। নথি আসল, এই রিপোর্ট এলে তবেই পুলিসের এনওসি মিলবে।
পাসপোর্টের নথি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরপিও অফিস ও পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের একাধিক গাফিলতি সামনে এসেছে। পাসপোর্ট আবেদনের সময় জমা পড়া আধার ও ভোটার কার্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট সহ বিভিন্ন নথি সেখানকার কর্মীরা যাচাই করছেন না বলে অভিযোগ। অথচ আরপিও দপ্তরের পরিকাঠামোতেই নথি আসল কি না, তা পরীক্ষা করার কথা। আরপিও অফিসের ভেরিফিকেশন ও গ্র্যান্টিং অফিসারদের একাংশকে ম্যানেজ করে দালাল চক্র ভুয়ো নথি জমা করে তৈরি করে নিচ্ছে পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিক, জঙ্গিদের স্লিপার সেলের সদস্যদের হতে যাচ্ছে। কলকাতা পুলিসের পাসপোর্টকাণ্ডের তদন্তে সেটি উঠেও এসেছে।
আরপিও অফিস ও পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে নথি যাচাই না হওয়ায়, স্বাভাবিকভাবেই তাদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এর জেরে রাজ্যের বদনাম হচ্ছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি আরপিও বা পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের গাফিলতির বিষয়টি সামনে না এনে, বারবার পুলিসের দিকে আঙুল তুলছে। অথচ নথি যাচাই পর্ব চলে আরপিও অফিসে। সেখানে সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবেই পুলিসের কাছে পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, আবেদনকারীর নামে কোনও অপরাধের রেকর্ড আছে কি না এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় তিনি থাকেন কি না। বারবার অহেতুক নাম জড়ানোয় রাজ্য পুলিস এবার নিজে থেকেই পদক্ষেপ নিল। আবেদনকারীর জমা দেওয়া সমস্ত নথি অর্থাৎ আধার, ভোটার, প্যান ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট চাইবেন পুলিস কর্মীরা। এরপর সেগুলি বিভিন্ন দপ্তর বা বিভাগের কাছে পাঠানো হবে। তাদের তরফে লিখিত রিপোর্ট এলে, তবেই সেই ফাইল আপলোড করবেন এই সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বে থাকা অফিসাররা। রাজ্য পুলিসের এক কর্তার কথায়, আরপিও বা পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্র সঠিকভাবে নথি যাচাই না করলে এবার থেকে তা ধরা পড়ে যাবে। এতে ভুয়ো নথি জমা করে পাসপোর্ট পাওয়া আটকে যাবে। এতে পাসপোর্ট পেতে একটু দেরি হলেও কোনও ফাঁক থাকবে না। একইসঙ্গে ভেরিফেকেশন ও গ্র্যান্টিংয়ের দায়িত্বে আরপিও অফিসের যে সমস্ত কর্মীরা থাকবেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।