• ছেলে–মেয়ের চোখের সামনে হাজার–হাজার পায়ে পিষ্ট মা
    এই সময় | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
  • দেবাশিস দাস

    মৌনী অমাবস্যার নিশি। রাত দুটো। প্রয়াগরাজের সঙ্গমঘাট। আলো অনেক তবু কুয়াশায় অস্পষ্ট। পূর্ণকুম্ভে পুণ্য লাভের লোভে লাভাস্রোতের মতো শুধু ঘাট–মুখী মানুষের স্রোত। গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে এক বার ডুব দেবেন। মায়ের দু’হাত ধরে এগোচ্ছিলেন ছেলে ও মেয়ে। মাইকে ঘোষণা চলছে, ‘আগে জান, পরে স্নান’। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ঘাটে যাবেন সবাই। হলো না।

    মহাকুম্ভেই চিরবিদায় নিলেন টালিগঞ্জের অশ্বিনীনগর কলোনির বাসন্তী পোদ্দার (৬১)। পিঙ্কি (৪০) ও সুরজিৎ (৩১) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মায়ের দেহ নিয়ে শহরে ফিরলেন। সঠিক ডেথ সার্টিফিকেট নেই।

    শেষকৃত্যের ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে এলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার তপন দাশগুপ্ত।

    সুরজিতের কথায়, ‘ভিড়ের মধ্যে মা আচমকা আলাদা হয়ে যায়। দেখি মাটিতে পড়ে। মাড়িয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার পা। আমি আর দিদি ছুটন্ত মানুষের পায়ে ধরে আটকানোর চেষ্টা করেছি। পারিনি.....’ গলা বুজে আসে। মাসি পুষ্প সাহাও গিয়েছিলেন। তিনি সুস্থ। মেলায়–মেলায় দোকান দেড় বাসন্তীর স্বামী রবীন্দ্রনাথ।

    বলেছিলেন, ‘মেলা কী জিনিস, আমি জানি। যেও না। বারণ শোনেনি।’ প্রতিবেশীরা বলছেন, তীর্থভ্রমণ ছিল বাসন্তীর নেশা। মথুরা, বৃন্দাবন, গয়া ঘুরে এই প্রথম কুম্ভে। আর সেটাই শেষ যাত্রা।

  • Link to this news (এই সময়)