এক বছরের কিছু বেশি সময় বাকি। সে কথা মাথায় রেখে এখনই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে চুপচাপ। এবং সেটা আরও সংহত করতে ঘর গোছানোও চলছে।
২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব নীরবে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ভোটে এখন চিরাচরিত, প্রথা মাফিক মেঠো লড়াইয়ের সঙ্গে ধন্ধুমার লড়াই হয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সামাজিক মাধ্যমের পরিসরে এই লড়াইয়ে তৃণমূলকে একাধারে বিজেপি ও সিপিএমের মোকাবিলা করতে হয়।
তৃণমূলের সাইবার সৈনিকদের বৃহত্তম সংগঠন ‘ফ্যাম’ গেরুয়া ও লাল ব্রিগেডের আক্রমণের মোকাবিলা করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের নিরন্তর প্রচার করে।
বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় লড়াই ততই তীব্রতর হবে, এটা ধরে নিয়ে ফ্যামের নেতৃত্ব আগেভাগে সংগঠনকে গুছিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ফ্যামের প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি পদের নির্বাচন হতে চলেছে। ফ্যামের সমস্ত জেলা কমিটির প্রায় ৫০০ সদস্য পুরোপুরি অনলাইনে এই ভোটগ্রহণ পর্বে অংশ নিতে চলেছেন। ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে ৬ তারিখই।
ফ্যামের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াইয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট তাপস সাধুখাঁ–র পাশাপাশি এক মহিলা মুখ–সহ দুই প্রার্থী রয়েছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে চার জন প্রার্থী। সেক্রেটারি পদেও লড়াই হতে চলেছে চার জনের। এ বছরই তৃণমূলের এই সোশ্যাল মিডিয়া বাহিনীর এক দশক পূর্ণ হবে। ফ্যামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ঋতম প্রামাণিক এই নির্বাচনে ইলেকশন কমিশনারের ভূমিকায়। ঋতমের কথায়, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ফ্যামের রাজ্য নেতৃত্বকে গঠন করা হয়। যিনি নতুন সভাপতি হবেন, তিনি চাইলে জেলা কমিটিগুলোর পুনর্গঠন করতে পারেন।’ এই সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে ফ্যাম ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রচারে কোমর বেঁধে নেমে পড়বে।
ফ্যামের ফেসবুক পেজ, টুইটার হ্যান্ডল, ইনস্টাগ্রামে লক্ষাধিক ফলোয়ার। ফ্যামে দৈনন্দিন কাজ করেন, এমন সক্রিয় কর্মীর সংখ্যা তৃণমূলের প্রতিটি সাংগঠনিক জেলাতেই কমবেশি ১০০। ফ্যামের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের আইটি সেলের ইন–চার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘তৃণমূলের নিজস্ব আইটি সেল তৈরি হওয়ার আগে থেকে ফ্যাম অত্যন্ত সুচারু ভাবে কাজ করে চলেছে। এই সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে রীতিমতো দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে কাজ করেন। তৃণমূলের যে কোনও বড়–ছোট কর্মসূচির প্রচারে ফ্যামের সহযোগিতা পাওয়া যায়। তাই, ফ্যাম যত সমৃদ্ধ হবে, তৃণমূলও সমৃদ্ধ হবে।’
সূত্রের খবর, গেরুয়া শিবিরের সোশ্যাল মিডিয়া বাহিনীরও আগামী দিনে আংশিক পুনর্গঠন হতে পারে। বঙ্গ বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া টিমের আহ্বায়ক এখন সপ্তর্ষি চৌধুরী। বিজেপির পাঁচটি জ়োন, লোকসভা, বিধানসভা, মণ্ডল ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া টিম রয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবির বুথ স্তরে সোশ্যাল মিডিয়া টিম তৈরির পরিকল্পনা করেছে। তা ছাড়া, দিল্লি থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে রণকৌশল ঠিক করে দেবেন, সেই মতো চলবে এই টিম।
সুকান্ত মজুমদারের জায়গায় বিজেপির নতুন সভাপতি কে হবেন, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজ্য সভাপতি বদল হলে সোশ্যাল মিডিয়া টিমে প্রয়োজনীয় রদবদল হতে পারে বলে বিজেপির একাংশের বক্তব্য। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিট তার ডিজিটাল টিমকে পুনর্গঠিত করেছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএমের ডিজিটাল টিমের ব্যাপ্তি আরও বাড়তে পারে।