আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্য সরকারের আবাস যোজনায় টাকা পাওয়ার জন্য বা গৃহ নির্মাণের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর কেউ যাতে কোনও স্তরের নেতাকে ‘কাটমানি’ না দেন তা সুনিশ্চিত করতে এবার প্রচারে নামল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ -১ ব্লকের মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্ব।
শুক্রবার সকাল থেকে ওই পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে মাইকে প্রচার করে গোটা বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীদের সচেতন করা হয়। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, দলের কোনও স্তরের নেতা যদি বাংলা আবাস যোজনার উপভোক্তাদের কাছ থেকে 'কাটমানি' হিসেবে কোনও টাকা চায় তাহলে গোটা বিষয়টি যেন দ্রুত তাদের নজরে আনা হয়।
প্রসঙ্গত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মুখাপেক্ষী না থেকে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজেই উদ্যোগ নিয়ে প্রথম দফায় আবাস যোজনার ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা করে পাঠিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও এবছরের শেষে পেয়ে যাবেন যোগ্য উপভোক্তারা। এর পাশাপাশি নবান্নের তরফ থেকে আবাস যোজনা সংক্রান্ত যেকোনও সমস্যা সমাধানের জন্য তিনটি হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রশাসনিক সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, সরকারি প্রকল্প সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কেউ এক টাকা চাইলেও দেবেন না। এটা সরকারের টাকা। এই টাকা নেওয়ার অধিকার কোনও ব্যক্তির নেই। যদি কেউ টাকা চায় তাহলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করুন। থানা যদি অভিযোগ না নেয় তাহলে 'সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী'র নম্বরে ফোন করে জানান। এরপরই মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানা এলাকায় দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
রঘুনাথগঞ্জ -১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গৌতম ঘোষ বলেন ,'কিছু অসাধু ব্যক্তি তৃণমূল কংগ্রেসের নাম করে আবাস যোজনার উপভোক্তাদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ চাইছেন। কেউ যাতে বিভ্রান্ত হয়ে কাউকে টাকা না দেয় তা সুনিশ্চিত করতেই মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্থানীয় নেতৃত্বের উদ্যোগে প্রচার শুরু হয়েছে।'
তাঁর কথায়,' মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য গরীব মানুষের মাথার উপর পাকা ছাদ করে দেওয়া। আমাদের দলের তরফ থেকে কোনওরকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। যদি কেউ আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অথবা ‘কাটমানি’ দিলে তবেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে এমন কথা বলে গরিব মানুষদের কাছ থেকে টাকা চায় তাহলে যে কেউ স্থানীয় থানা বা আমাদের কাছে এসে জানাতে পারেন। আমরা সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেব। '
অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্বের এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। কয়েকজন গ্রামবাসী নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পর কয়েকজন নেতা কিছু উপভোক্তার কাছ থেকে ৫০০০ টাকা করে চেয়েছেন। কিন্তু যেভাবে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফ থেকে মাইকে প্রচার করে কাটমানি না দেওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে তাতে আমরা ভরসা পাচ্ছি। আমরা কোনও নেতাকে ঘরের জন্য কাটমানি দেব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।