বাবা কেন প্রেমিক? অনেক দিনের রাগেই নৃশংশ খুন! বাইপাসের ঘটনায় বিস্ফোরক তথ্য এল সামনে
আজকাল | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে হতে পারে বলিউডের ছবি। কিন্তু তা নয়। ঘটনা বাস্তব। বাইপাসের ধারে মধ্যরাতে বাবার প্রেমিকাকে হাতেনাতে ধরে কুপিয়ে মারল স্ত্রী, সন্তান ও এক আত্মীয়। ঘটনাক্রমের সারল্য এখানেই থেমে থাকলে হয়তো বেশি মাথা ঘামাতে হত না। কিন্তু জিপিএস অন করে বাবার অবস্থান জেনে দেড় কিলোমিটার গাড়ি নিয়ে ধাওয়া করে কুপিয়ে খুন করা ঘটনাটিকে জটিল করেছে। আপাত ভাবে কেবল নাবালক সন্তানের দোষ মনে হলেও পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে, আক্রোশ মূলত ছিল স্ত্রীরই। তারই ফলশ্রুতি বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। যদিও ঘটনাস্থল থেকেই তিন পাষণ্ডকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল পরিবারের চরম অশান্তি কলকাতার বাইপাসের কলিন লেনের বাসিন্দার পরিবারে। কারণ, সন্দেহ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের। ওই ব্যক্তির বেশ কিছুদিন ধরেই একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিবাহিত মহিলা রাফিয়ার সঙ্গে। এই সম্পর্কের কথা ওই ব্যক্তির স্ত্রী শেহেজাদি এবং তাঁর নাবালক পুত্র জানতে পারে। তাই নিয়ে বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। পরবর্তীতে এই অশান্তি চরমে ওঠে। বাবার ওপর গোয়েন্দাগিরি শুরু করে নাবালক। তারই পরিণাম বৃহস্পতিবার রাতের হত্যাকাণ্ড। সূত্রের খবর, দু'দিন আগে নাবালক পুত্র এবং স্ত্রী মিলে হত্যার ছক কষতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান নাবালকের তুতো ভাই।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মা-ছেলে যখন জানতে পারে বান্ধবীকে নিয়ে বেরিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তখন লোকেশন জানতে বাবার মোবাইলের জিও লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে গুণধর ছেলে। সেই পথ ধরেই এগিয়েই বাইপাসের ধারে একটি চায়ের দোকানে পৌঁছয় তাঁরা। অদূরে অপেক্ষা করছিলেন আক্রান্ত মহিলা ও তাঁর সঙ্গী। ঠাওর করতে পেরেই অভিযুক্তরা তিনজন মিলে ওঁদের ধাওয়া করেন। সিনেমার এখানেই শেষ নয়। এ বার নিজেদের গাড়ি নিয়ে আক্রান্তের গাড়ির পথ আগলে দাঁড়ায় ওই তিনজন। বুঝতে পেরে বান্ধবীকে নিয়ে পালাতে চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। তিনি পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যান রাফিয়া।
তাঁকে শক্ত হাতে ধরে রাখে ছেলে। এবং তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। বাবার প্রেমিকার প্রতি ক্ষোভ সেখানেই শেষ হয়নি। হত্যা নিশ্চিত করতে গলার নলি কাটে নাবালক অপরাধী। কিন্তু বাইপাসের ধারে এই ঘটনা আশেপাশের লোক জানতে পেরে যান। ছুটে আসেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসে পুলিশও। নাবালককে আটক করে আর বাকি দু'জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান প্রগতি ময়দান থানার আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা আহত রাফিয়াকে নিয়ে যায় চিকিৎসার কারণে এনআরএস হাসপাতালে। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু ঘটেছে।
উল্লেখ্য, ওই ব্যক্তি যুক্ত গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সংস্থার সঙ্গে। ফলে গাড়ি সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তাঁর পরিবারের সদস্যদের নখদর্পণে ছিল। আর আগে থেকেই গোয়েন্দাগিরির অভ্যাস থাকার কারণে নাবালকের জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে বাবার গাড়ির অনুসরণ করতে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি। ওই ব্যক্তির অবৈধ সম্পর্কের কারণে অশান্তি ছিল বহুদিন ধরে। তার প্রতিশোধ নিতেই তরুণীকে খুন করে বলে অনুমান পুলিশের। তরুণীকে আক্রমণ করলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান ফারুক। তাঁরা যে গাড়িতে এসেছিলেন, তার চালকও সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।