জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার রাতে ইএম বাইপাসে হাড়হিম কাণ্ড। প্রকাশ্যে তরুণীকে এলোপাথাড়ি ছুরির কোপ। আহত অবস্থায় তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালকের বাবার সঙ্গে বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল ওই তরুণীর। আর তার জেরেই এই ঘটনা।
ঘটনায় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলেই তিনি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে মিলে গল্প করছিলেন। তখনই সেখানে 'থর' গাড়ি এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে ওই তরুণীকে মেরে বার করে দেওয়া হয়। তরুণী টলতে টলতে সোজা হাঁটতে শুরু করে। সেইসময় তাঁর এক পায়ে জুতো এবং আর একটা খালি পা। সামনে এগিয়ে সে কয়েকজনের থেকে জল নিয়ে মুখ ধোয়। সেই সময় দেখা যায় যে, তাঁর মাথা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। আচমকাই একটি ছেলে বাইক থেকে নেমে তরুণীর দিকে তেড়ে যায়।
সেই সময় আর এক মহিলা, যে ওই ছেলের সঙ্গেই এসেছিল। সে বোরখা খুলে ছেলের দিকে দৌঁড়ায়। ততক্ষণে ছেলেটি ওই তরুণীকে পেপার কাটার ছুড়ি দিয়ে দুবার আঘাত করে। তারপর ওই মহিলাও তরুণীকে মারার চেষ্টা করে। এরপর ওই মহিলা তরুণীকে রাস্তায় ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং গলায় আঘাত করে। পুরো শরীরে রক্তে ভেসে যায় আহত তরুণীর।
প্রত্যক্ষদর্শী আরও জানিয়েছেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলেটি সবাই ঘিরে ফেলে। অন্য়দিকে আহত তরুণী কোনওক্রমে হাঁটতে হাঁটতে ওষুধের দোকানে যায়। তখন একটি মেয়ে এসে তাঁকে ক্যাবে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। তখনই পুলিসের গাড়ি যাচ্ছিল। তারপর পুলিসই ব্যবস্থা করে তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, অভিযুক্ত সহ আর এক ছেলেকে পুলিস আটক করে। মহিলা পুলিস ডেকে ওই মহিলাকে আটক করা হয়। ততক্ষণে 'থার' গাড়িটি করে লোকটি চম্পট দেয়।
পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নিহত তরুণীর নাম রোফিয়া শাকিল। মহম্মদ মোবিন আহমেদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি বিবাহিত ছিলেন। অন্যদিকে মহম্মদ ফারুক আনসারি সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন ২৪ বছরের রোফিয়া সাকিল। ফারুকের গাড়ির জিপিএস ট্র্যাক করে বাইকে করে সেখানে হাজির হয় তার ১৬ বছরের ছেলে মহম্মদ আরসলাম, তার স্ত্রী শাহজাদি ফারুক এবং ২২ বছরের ওয়াসিম আকরম। আচমকাই ১৬ বছরের আরসলাম ছুরি দিয়ে রোফিয়া শাকিলকে এলোপাথারি আক্রমণ করে। অন্যদিকে, হামলার সময় মহম্মদ ফারুক আনসারি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিস এখনও পর্যন্ত তার হদিশ পায়নি। এমনকী ফারুকের ফোনও বন্ধ বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে প্রগতি ময়দান থানা। ইতোমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।