• তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে ধুন্ধুমার
    এই সময় | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, তারকেশ্বর: দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর তার জেরে ধুন্ধুমার কাণ্ড তারকেশ্বরে। টেবিল পেতে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের কারণে বৃহস্পতিবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। উত্তেজিত জনতাকে লাঠি উঁচিয়ে এলাকাছাড়া করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে তারকেশ্বরের নাইটা মাল পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষুদ্ররামপুর হাইস্কুলে। এ দিন এলাকার উপপ্রধানের দেহরক্ষী বন্দুক বার করে হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। এর পরেই রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের ক্যাম্পে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। কাউকেই আর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

    পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার থেকে নাইটা মাল পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষুদ্র রামপুর হাইস্কুলে শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প। বুধবার নির্বিঘ্নে ক্যাম্প পরিচালিত হলেও বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্প শুরু হতেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। পুরোপুরি লাঠিসোঁটা নিয়ে মারামারি শুরু হয়ে যায়। সাধারণ মানুষকে ক্যাম্প থেকে তৃণমূলের কোন গোষ্ঠী পরিষেবা দেবে, এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় ও নাইটা মাল পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ মনিরুলের (আকাশ) গোষ্ঠীর বিবাদ এর আগেও দেখা গিয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে লাঠালাঠি হয় বলেও দাবি করেন ক্যাম্পে আসা সাধারণ মানুষ। তখনই উপপ্রধানের দেহরক্ষী বন্ধুক বার করে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ‘দুয়ারে সরকার’–এর ক্যাম্পে গণ্ডগোল হচ্ছে, এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায়, তারকেশ্বরের সিআই–সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী।

    হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায় বলেন, ‘একটা ঝামেলা হয়েছিল নিজেদের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ক্যাম্পের মধ্যে রাজনৈতিক কোনও নেতা–কর্মীর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’ পুলিশ মোতায়েনের পর আবার দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প শুরু হয়। নাইটা মাল পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ মনিরুলের দাবি, তাঁর দেহরক্ষীর বন্দুক যাতে ছিনতাই না হয়ে যায়, সে কারণেই দেহরক্ষী বন্দুক বার করতে বাধ্য হয়েছিল। কাউকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি।

    অন্যদিকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা ঝামেলা করেছে, তারা বিজেপির লোক। বিরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে অশান্তি করা হয়েছিল। ওরা তৃণমূলের কেউ নয়।’

    বিধায়ক অনুগামী বিরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য পাল্টা দাবি, অশান্তি যারা করেছিল, তারা একনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী। এলাকাকে তারাই উত্তপ্ত করেছে। পরিষেবা নিতে যাওয়া এক মহিলার অভিযোগ, ‘কে কার দেহরক্ষী কী করে বুঝব! তিনি তো পুলিশের কোনও পোশাক পরে ছিলেন না। এলাকায় ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল মনিরুল ও তার অনুগামীরা।’ এই বিষয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘আমি শুনেছি, একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশ সবটাই সামাল দিয়েছে। তবে যে বা যারা এতে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’

  • Link to this news (এই সময়)