দুই পা-ই নেই, বিশেষ ভাবে সক্ষমকে খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড জেলা আদালতের...
আজকাল | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মিল্টন সেন: হাঁটুর নিচ থেকে দুটো পা নেই। ট্রেনে কাটা পড়ে পা বাদ গেছে অনেক আগেই। ভিক্ষা করে দিন গুজরান হত। অথচ ভিক্ষার আড়ালে অপরাধজগতের সঙ্গে যোগ ছিল গভীর। একাধিক চুরি ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। চার বছর আগের খুনের মামলায় ব্যান্ডেলের সেই কুখ্যাত দুষ্কৃতি ছোট্টু পান্ডেকে শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল চুঁচুড়া আদালত। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর রাতে ব্যান্ডেল স্টেশন রোড এলাকায় ওভারব্রিজের কাছে মদের ঠেকে বচসায় জড়িয়ে পড়ে ছোট্টু। সেখানেই রিক্সাচালক রামদাস মাঝিকে(৩০) ছুরি মেরে খুন করেন তিনি। পাঁজরে ছুরি ঢুকিয়ে দেন। খবর পেয়ে ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার পরের দিন রামদাসের ভাই শ্যাম মাঝি চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা একটি ঘুমটি থেকে রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার হয়। তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয় আদালতে।
চুঁচুড়া আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় শর্মার এজলাসে শুরু হয় মামলার বিচার পর্ব। মামলার সরকারি আইনজীবী অরূপ চট্টোপাধ্যায় ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। অভিযুক্ত বিচারাধীনবন্দি থাকা অবস্থায় চলে মামলার বিচার। গত বুধবার আদালত ছোট্টুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শুক্রবার সাজা ঘোষণা করে আদালত। এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি বলেছেন, যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাজা ঘোষনা করেছে আদালত। সঙ্গে দশ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের জেল। যার দু'টি পা নেই, এরকম একজন বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন ব্যান্ডেলের এই ঘটনা তার প্রমাণ। এ দিন আদালতে সাজা ঘোষণার পর ছোট্টু নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।