বাড়িতে কমপিউটার হ্যাকিং প্রশিক্ষণের পাঠশালা খোলেন মূল চক্রী মুফতাজুল
বর্তমান | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যে ট্যাব কাণ্ডের মূল চক্রী মুফতাজুল ইসলাম তাঁর চোপড়ার বাড়িতেই কমপিউটার হ্যাকিং করার পাঠশালা খুলেছিলেন। সরকারি কোন কোন স্কিমে টাকা দেওয়া হয় এবং এই টাকা কীভাবে তুলে নিতে হবে এই নিয়ে স্থানীয় যুবকদের তিনি পাঠ দিতেন। তাদের মধ্যে থেকে বাছাই করা ছেলেদের নিয়ে টিম তৈরি করেছিলেন মুফতাজুল। ধৃত মুফতাজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁর টিমে সদস্য সংখ্যা কত, তা জানার চেষ্টা চলছে।
নেপাল সীমান্ত থেকে ফিরতেই বুধবার চোপড়ার কোটগাছ এলাকা থেকে ধরা পড়ে মুফতাজুল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারছেন, শুধুমাত্র ট্যাব নয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কোন কোন স্কিমে কীভাবে টাকা দেওয়া হয় তার পুরোটাই জানতেন তিনি। স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ হওয়ায় তাঁর ধারণা ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ বিকাশ ভবনে ডেটা পাঠায় কীভাবে। সেই কারণে প্রথমে তিনি স্কুলকে টার্গেট করেন। পরে তাঁর পরিকল্পনা ছিল সরকারের অন্য যে সমস্ত জনমুখী প্রকল্প রয়েছে সেখান থেকে টাকা তুলে নেওয়া।
তদন্তে উঠে এসেছে, মাজিআলি স্কুলের এই টিচার-ইন-চার্জের কমপিউটারের অনেক খুঁটিনাটি জিনিস নখদর্পণে ছিল। একইসঙ্গে তিনি জানতেন, কীভাবে পাসওয়ার্ড খোলা সম্ভব। ওই শিক্ষক জেরায় আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হ্যাক করে তুলে নেওয়ার জন্য টিমের দরকার ছিল। সেই কারণে স্থানীয় যুবকদের কমপিউটারের খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অফার করেন। তাঁর সঙ্গে চোপড়ার বেকার যুবকরা যোগাযোগ শুরু করে। সেইমতো মুফতাজুল তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। সেখানেই চলত কীভাবে হ্যাক করে বিভিন্ন সরকারি সাইটের দখল নিতে হয়। সেখান থেকে বাছাই করা যুবকদের নিয়ে টিম তৈরি করেন তিনি। বিভিন্ন স্কুলের ট্যাবের তথ্য পাঠানোর জন্য যে সাইট রয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে, তার পাসওয়ার্ড জোগাড় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ওই টিমেরই কয়েকজনকে। সেইমতো তারা বিভিন্ন সোর্স কাজে লাগিয়ে এই তথ্য জোগাড় করছিল। একইসঙ্গে স্কুলের তালিকা ধরে এই সংক্রান্ত সাইটের পাসওয়ার্ড ভাঙার কাজ চালাচ্ছিল অন্য টিম। পাশাপাশি টিমের সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির নথি জোগাড় করা হয়। তাই দিয়ে মিউল অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা জমা করা হচ্ছিল বলেই খবর পেয়েছেন তদন্তকারীরা।