• হাসিনাকে ‘ফেরানো’ নিয়ে কী ভাবনা, ব্যাখ্যা দেবে কেন্দ্র?
    এই সময় | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আগেই ভারত সরকারকে ‘নোট’ পাঠিয়েছিল ঢাকা। সেই ‘নোট’ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে কেন্দ্র তার অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেনি। এ বার সংসদে সেই অবস্থান স্পষ্ট করবে নরেন্দ্র মোদী সরকার? এমনই জল্পনা জোরালো হয়েছে নয়াদিল্লিতে সংসদের অন্দরে। সূত্রের খবর, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের নোটের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করেছে, তা নিয়ে কেরালার সিপিএম সাংসদ জন ব্রিটাস লিখিত প্রশ্ন করেছেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় সেই প্রশ্নের লিখিত জবাব দেবে বিদেশ মন্ত্রক।

    সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেরালার সাংসদ ব্রিটাস সংসদে লিখিত ভাবে হাসিনা প্রসঙ্গে তিনটি প্রশ্ন জমা দিয়েছেন। প্রশ্নগুলি হলো— হাসিনাকে কি বাংলাদেশ ফেরত চেয়েছে? চাইলে, কেন চেয়েছে? এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কী জানিয়েছে ভারত? তাঁর এই প্রশ্নমালা সংসদে গৃহীত হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আগামী ৬ তারিখ কেন্দ্র এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিলে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মোদী সরকারের মনোভাব অনেকটা স্পষ্ট হবে।

    বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হাসিনার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির পরেই হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে ‘নোট’ পাঠিয়েছিল ঢাকা। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে সেই ‘নোট’ প্রাপ্তির কথা জানান। তবে এ নিয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি। যার ফলে হাসিনাকে নিয়ে ভারতের অবস্থানে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে বলে বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ। সেই ধোঁয়াশা কেন্দ্রের তরফে কাটানোর চেষ্টা হয় কি না, সে দিকে নজর রাখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

    বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘বিদেশনীতির প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চান। তাই বাংলাদেশ নিয়ে কোনও অসচ্ছতা তৈরি হলে তা দূর করতে প্রধানমন্ত্রী বদ্ধপরিকর। এ জন্যই বিজেপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের থেকে আলাদা। ৬ তারিখ বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেবে, ভারতে আশ্রয় নিয়ে থাকা হাসিনাকে নিয়ে কী ভাবছে ভারত সরকার। কংগ্রেস জমানায় বিদেশনীতি বারবার প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, কংগ্রেস স্বচ্ছ ভাবে কখনও কিছু করেনি।’

    গত অগস্টে বাংলাদেশে ‘ছাত্র–জনতা’র আন্দোলনের জেরে সেখানে আইন–শৃঙ্খলা অবস্থার চরম অবনতি হয়। আন্দোলনের মুখে গত বছর ৫ অগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। তারপর থেকেই তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। এরপর থেকে ও পারে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া–সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে টানাপড়েন চলেছে। ফলে ভারতের আশ্রয় নিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবছে, তার উপর দু’দেশের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নির্ভর করছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
  • Link to this news (এই সময়)