• বইমেলার ম্যাপের হার্ডকপি অতীত! পুরোটাই এখন অনলাইন, উঠছে ডিজিটাল ক্যাটালগের দাবিও
    এই সময় | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • মধুরিমা রায়

    বইমেলার ম্যাপ কোথায়? বইমেলার ময়দানে ম্যাপ হাতে এ দিক-ও দিক তাকিয়ে পছন্দের স্টলের খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন উৎসুক বইপ্রেমীরা — এই দৃশ্য দেখতে আমরা সকলেই অভ্যস্ত। আসলে সবই যখন হার্ডকপি থেকে ডিজিটাল হচ্ছে, বইমেলার ম্যাপই বা হবে না কেন? হয়েছেও। ক্রেতাদের পছন্দের স্টল কোন দিকে, তা বাতলে দিতে প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন কলকাতা বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্সের কর্তারা।

    ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ঢুকতে রয়েছে ন’টি গেট। প্রতিটি গেটের সামনে বসানো একটি স্ক্যানার। মোবাইল ফোন থেকে সেই স্ক্যানারটি খুললেই সংশ্লিষ্ট গেট থেকে যে স্টলে পাঠকরা যেতে চান, সেই রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই স্ক্যানার থাকছে মেলার কেন্দ্রবিন্দু গিল্ড দপ্তরের সামনেও।

    গত বছর থেকে এই পদক্ষেপ করছে বইমেলার আয়োজক সংস্থা কলকাতা বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড। সংস্থার সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে এই সময় অনলাইনকে বললেন, ‘হার্ডকপিতে ম্যাপের ব্যবস্থা আছে, তবে তা কেউই প্রায় চাইছেন না। এত বছর ধরে আমরা দেখেছি, মেলায় এসে বহু ক্রেতা সবার আগে গিল্ডের দপ্তর থেকে ম্যাপ চেয়ে নিতেন। তবে এ বছর তাঁদের সংখ্যা খুব কম। এ বার ম্যাপ চাইছেন শুধুমাত্র বয়স্করাই।’ অর্থাৎ টেক-স্যাভি নবীন প্রজন্ম এই অনলাইন স্ক্যানড মানচিত্রকে সাদরে গ্রহণ করেছে।

    বাগুইআটি থেকে বইমেলায় এসেছেন সৌমিলি দে। তাঁর কথায়, ‘এই স্ক্যানারটা পেয়ে খুব সুবিধা হয়েছে। ম্যাপ হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ঝক্কি নেই। সবকিছুই তো আজকাল ডিজিটাল হচ্ছে। বইমেলারই বা ডিজিটাল ম্যাপ হবে না কেন?’

    বইমেলায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া নিয়ে অভিযোগ প্রায়শই শোনা যেত। সেখানে মোবাইল ফোনে এই ম্যাপ কাজ করছে ঠিক মতো? হাওড়ার বইপ্রেমী শিবনাথ কুণ্ডুর মত, ‘গত বছর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যা কিন্তু অনেকটাই কম। সে ক্ষেত্রে ম্যাপ দেখতেও কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। শুনলাম, এই অনলাইন ম্যাপ নাকি গতবছরও ছিল। তবে আমি এই ম্যাপ এ বারই প্রথম ব্যবহার করছি। এই অ্যাপ এককথায় সুপারহিট!’

    ম্যাপের পাশাপাশি পাঠকদের মধ্যে উঠছে আরও নতুন দাবি। বনগাঁ থেকে মেলায় আসা অসমঞ্জ দে বললেন, ‘অনেকেই কাগজের ম্যাপ নিতেন, তা ব্যবহার করে মেলাতেই ফেলে দিয়ে যেতেন। এতে মেলার পরিবেশ নষ্ট হতো। অনলাইন ম্যাপে সেটা হচ্ছে না। তবে আরও একটি দাবি রয়েছে অসমঞ্জর। তা হলো, বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশিত বইয়ের তালিকা বা ক্যাটালগ অনলাইনে দেওয়া হোক। তা হলে বইপ্রেমীরা আগে থেকে তাঁদের পছন্দ মতো বই বেছে নিতে পারবেন। মেলায় এসে বিস্তর খোঁজাখুঁজি করতে হবে না। যাঁদের বই কেনার ক্ষমতা সীমিত, তাঁরা তাঁদের বাজেট অনুযায়ী বই কিনতে পারবেন।

    প্রকাশনা সংস্থার ক্যাটালগ অ্যাপ বিষয়ে দে'জ প্রকাশনার শুভঙ্কর দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, এই সময় অনলাইনকে তিনি জানান, 'দে'জ-এর ক্যাটালগ অনলাইনে আছে। তবে সব প্রকাশনা সংস্থার নেই। যেহেতু বিষয়টা একটু খরচসাপেক্ষ তাই হয়তো সব প্রকাশক অনলাইন ক্যাটালগ তৈরি করে উঠতে পারেননি। অনলাইন ম্যাপ হয়েছে পাঠকের দাবি মেনে, অনলাইন ক্যাটালগও কি হবে? উত্তর সময়ই দেবে।

  • Link to this news (এই সময়)