তালায় মাখানো মানুষের মল! খোলাই গেল না স্কুলের গেট, ছুটি মঙ্গলকোটের বিদ্যালয়ে
প্রতিদিন | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ধীমান রায়, কাটোয়া: স্কুলের সামনে গিয়ে অপেক্ষা করছিল পড়ুয়ারা। কখন এসে মাস্টারমশাই গেটের তালা খুলবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিক্ষকও এলেন। আর গেটের তালা খুলতে গিয়ে দুর্গন্ধে শিক্ষকের অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসার জোগাড়! কারণ তালা এবং গেটের গায়ে মাখানো হয়েছে মানুষের বিষ্ঠা। খবর পেয়ে এলেন স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবকও। কিন্তু ওই নোংরা পরিস্কার করে তালা খুলবে কে? শেষ পর্যন্ত স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হল। শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এই ঘটনা ঘিরে হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে যায় এলাকায়।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এই ধরনের উপদ্রব নতুন নয়। আগেও স্কুলচত্বরে লুকিয়ে মলত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু গেটের তালায় মল মাখানোর ঘটনা কোন আক্রোশে? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্কুলের শৌচালয়গুলি এযাবৎ খোলাই থাকত। আর স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে সেগুলি যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে এসেছেন এলাকার কেউ কেউ। স্কুলের শৌচালয়গুলিতে দিন চারেক ধরে তালা লাগিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সন্দেহ ওই আক্রোশেই কয়েকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে। স্কুলের শিক্ষক থেকে স্থানীয় অভিভাবকদের সন্দেহ, এটি একাধিকজন মিলেই ঘটিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮০ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন চারজন। যদিও স্কুলটি সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরাই রয়েছে। তবে স্কুলের মিড ডে মিলের রাঁধুনি হাবিবা বিবি, কোকিলা খাতুনদের অভিযোগ, ” মাঝেমধ্যেই স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থায় কেউ কেউ ঢুকে স্কুল চত্বর নোংরা করে। যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। শৌচালয়গুলিও ব্যবহার করে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক সায়ন সাহাকে জানিয়েছিলেন স্থানীয় অভিভাবকরা। প্রধানশিক্ষক তৎপর হন। দিন চারেক আগে প্রধান শিক্ষক স্কুলের ভিতরের শৌচালয়গুলিতে তালা লাগানো ব্যবস্থা করেন এবং স্কুল চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করেন।”
এদিন শনিবার কয়েকজন পড়ুয়া হাজির হয়েছিল স্কুলে। গেটের সামনে অপেক্ষা করছিল পড়ুয়ারা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিক্ষক আসেন। তিনি যখন চাবি হাতে তালা খুলতে যান তখনই দেখা যায় গেটের তালায় এবং দরজায় যথেচ্ছ পরিমাণে মল মাখিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই মল পরিষ্কার করতে কেউ এগিয়ে আসেনি । নাকে কাপড় দিয়ে সবাই পিছটান দেন। স্থানীয়রা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন সরস্বতী পুজোর ছুটির পর ওই তালা পরিষ্কার করে স্কুল খোলা হবে। প্রধান শিক্ষক সমগ্র ঘটনা স্কুল পরিদর্শকের কাছে জানিয়েছেন।