যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, বন্দি বিল্লাল-মানিকদের হাতে সেজে উঠলেন সরস্বতী
প্রতিদিন | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: কেউ দ্বিতীয় শ্রেণি, কেউ বা চতুর্থ শ্রেণি পাশ করেছেন। অতীতে বিভিন্ন সময়ে তাঁরা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। হাতে লেগেছিল রক্তের দাগও। অথচ তাঁরাই বাণীবন্দনায় মেতেছেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার বন্দির নিপুণ হাতে তৈরি হচ্ছে সরস্বতীর মূর্তি। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পাশেই রিক্রিয়েশন ক্লাবের উদ্যোগে ওই সরস্বতী পুজোয় সম্প্রীতির ছোঁয়া উঠে এসেছে।
বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী বিল্লাল শেখ, মানিক রজক, অসীম মণ্ডল এবং রাজেশ দাস। তাঁরাই তৈরি করছেন সরস্বতী প্রতিমা। বাগদেবীর আরাধনার যারা স্বাদ পাননি, সেই বন্দিরা নিজের হাতে প্রতিমাকে সাজিয়ে তুলছেন। প্রতিবারের মতো এবারও সরস্বতী পুজো হচ্ছে বহরমপুর সংশোধনাগারের রিক্রিয়েশন ক্লাবে। জেল সুপার দীপককুমার সার্কি ওই পুজো কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি নিজে গোটা বিষয়টি তদারকি করছেন।
এদিন দীপককুমার সার্কি বলেন, “বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দি বিল্লাল শেখ আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনি যে প্রতিমা বানাতে পারবেন সেটা কল্পনাও করা যায়নি। এছাড়া মানিক রজক একজন মালি। ফুলবাগান পরিচর্যা করেন। তিনিও প্রতিমার কাজে হাত লাগিয়েছেন।” জানা গিয়েছে, মূল কারিগর বিল্লাল শেখের হাতের তৈরি প্রতিমা এবার ‘সম্প্রীতি সরস্বতী’ হিসেবে শোভা পাবে মণ্ডপে।
তাছাড়া যারা সহযোগিতা করছেন, তাঁদেরও জেলের বাইরে প্রতিদিন সময় করে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে জেল পুলিশের রিক্রিয়েশন ক্লাবের সম্পাদক হজরত শেখ বলেন, “এবার ৩০ হাজার টাকার বাজেটের সরস্বতী পুজো হচ্ছে। জেল পুলিশরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে ওই পুজো পরিচালনা করছেন।” এই পুজোর উপদেষ্টা ডিআইজি বহরমপুর রেঞ্জ নবীনকুমার সাহা। তিনি নিজেও এই বিষয়ে সহযোগিতা করছেন বলে খবর। এই পুজো ঘিরে সংশোধনাগারে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।