সামাজিক প্রকল্পে কাটছাঁট, মহিলারা ব্রাত্য কেন? ‘ধ্বংসাত্মক বাজেট’ বলে সমালোচনা অমিত মিত্রর
প্রতিদিন | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কেন্দ্রীয় বাজেটে করছাড়ে বড়সড় ঘোষণা যেমন মধ্যবিত্তকে অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে, তেমনই একাধিক ক্ষেত্র উপেক্ষিত এবং কোনও কোনও জরুরি প্রকল্পে কাটছাঁটের কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। আর তাঁর সেসব ঘোষণা ‘ধ্বংসাত্মক’, ‘জনবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের অর্থ উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। একেবারে তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দেখান, সামাজিক প্রকল্প, খাদ্যে ভরতুকি কমানো কতটা জনস্বার্থ বিরোধী। প্রশ্ন তুললেন, দেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা কোথায় বাজেটে? বিমায় বিদেশি বিনিয়োগের ১০০ শতাংশ সুযোগ মিললেও কেন আমজনতার জন্য স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি কমানো হল না?
স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি কমানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। জিএসটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে অমিত মিত্রও বারবার বৈঠকে এই প্রস্তাব রেখেছেন। আশা ছিল, এবারের বাজেটে হয়ত কেন্দ্র সেই দিকটা দেখবে। কিছুটা কমবে স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটির হার। কিন্তু শনিবারের বাজেটে নির্মলা সেদিক থেকে হতাশই করলেন। এই সংক্রান্ত কোনও ঘোষণাই হল না। তা নিয়েই অমিত মিত্র প্রশ্ন তুলেছেন, এর যৌক্তিকতা কী? বিমায় করছাড় অনেক বেশি প্রয়োজনীয় ছিল। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন কোনও দাওয়াই নেই নির্মলার বাজেটে? সেই প্রশ্নও তুলেছেন রাজ্যের আর্থিক উপদেষ্টা। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, সামাজিক পরিষেবা খাতে ১৬ শতাংশ, আবাসনে ৬ শতাংশ, খাদ্যে ভরতুকিতে ১ শতাংশ কমানো হয়েছে।
নির্মলার বাজেটে পোষণ ২.০ প্রকল্পে প্রান্তিক এলাকার মহিলাদের জন্য আরও কিছু সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। মহিলা ও শিশুদের পুষ্টি জোগানোর ওই প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি শিশু, ১ কোটি অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতির পাশাপাশি বয়ঃসন্ধিকালীন ২০ লক্ষ মেয়েকেও এবার আনা হল। এই প্রকল্পে বিশেষ জোর দেওয়া হবে উত্তর-পূর্বে। দেশের জনসংখ্যার নিরিখে মহিলা-শিশুদের সুস্থতাকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারমণ। তবে তা মহিলাদের জন্য খুবই সামান্য বলে মনে করছেন অমিত মিত্র। নারীর ক্ষমতায়নে মহিলা অর্থমন্ত্রীর দান শূন্য, এমনই সমালোচনা শোনা গেল তাঁর গলায়। সবমিলিয়ে, এই বাজেটকে ‘ধ্বংসাত্মক, গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে বর্ণনা করেছেন অমিত মিত্র।