কেন্দ্রীয় বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য বিপর্যয়, ধ্বংসাত্মক বলে তুলোধনা করলেন অমিত
হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজ, শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাতে নানা চমক থাকলেও এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে বাজেট নয় বলেই বিরোধীরা মনে করছেন। এই কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা বাংলার সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. অমিত মিত্র। সাধারণ মানুষের জন্য এই বাজেট একপ্রকার বিপর্যয় এবং গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয় বলে জানিয়ে দিলেন অমিত মিত্র। এমনকী বহু অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা কেন্দ্রীয় বাজেটকে এভাবেই বর্ণনা করছেন বলে জানান তিনি। আর যা সব ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সেগুলি ‘ধ্বংসাত্মক’, ‘জনবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
এদিকে কেন্দ্রীয় বাজেট যে সাধারণ মানুষের স্বার্থে হয়নি সেটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেন অমিত মিত্র। সঙ্গে ছিল তীব্র সমালোচনা। রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের প্রশ্ন, ‘এই বাজেট কী করল? সামাজিক পরিষেবায় ১৬ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। আবাসনে কমানো হয়েছে ৪.৩৮ শতাংশ। সমাজকল্যাণ ও তফসিলি জাতি– উপজাতির মানুষরা বিশ্বাস করুন বা না করুন, তিন শতাংশেরও বেশি কাট অফ করা হয়েছে। তারপর সমাজ কল্যাণে ৫ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল খাদ্য ভর্তুকি ১ শতাংশ কমানো হয়েছে। আর এই বাজেটে মহিলা এবং কৃষকদের জন্য কিছুই নেই।’
অন্যদিকে একেবারে পরিসংখ্যান তুলে ধরে অমিত মিত্র দেখান, সামাজিক প্রকল্প, খাদ্যে ভরতুকি কমানো কত পরিমাণ জনস্বার্থ বিরোধী। অমিতবাবুর প্রশ্ন, দেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা কোথায় আছে বাজেটে? বিমায় বিদেশি বিনিয়োগের ১০০ শতাংশ সুযোগ মিললেও কেন আমজনতার জন্য স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি কমানো হল না? দেশে বেকারত্বের হার প্রবল। সমীক্ষা বলছে তার মধ্যে ৩০ শতাংশ যুব স্নাতক। অক্টোবর এবং ডিসেম্বর মাসে যেখানে বেকারত্ব ছিল ৩ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি সেখানে তাঁদের জন্য কিছুই ঘোষণা করা হল না কেন? বিমায় কর ছাড় অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল। তার সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন কোনও দাওয়াই নেই নির্মলার বাজেটে?
এছাড়া দেশের জনসংখ্যার নিরিখে মহিলা এবং শিশুদের সুস্থতাকে প্রাধান্য দিয়ে পোষণ ২.০ প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। তবে সেটা দেশে মহিলাদের জন্য খুবই সামান্য বলে মনে করেন অমিত মিত্র। নারীর ক্ষমতায়নে মহিলা অর্থমন্ত্রীর দান শূন্য বলে কটাক্ষ তাঁর। অমিত মিত্র বলেন, ‘বিমা খাতে যেখানে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদিত। সেখানে ভারতীয় বেসরকারি খাতের কোম্পানি এবং অন্যান্য বিমা কোম্পানিগুলি এখন তাদের ১০০ শতাংশ ইকুইটি নিয়ে আসছে। রাজ্য জীবন বিমা–সহ অন্যান্য বিমার উপর জিএসটি নেয়। এটা ঠিক নয় বলেই বাংলা ১৮ শতাংশ পরিষেবা কর থেকে কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ সরকার মনে করে, এই করের জেরে অনেক মানুষই আছেন যাঁদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এখানে কি কোনওরকম অভিসন্ধি আছে কেন্দ্রের? কারা এর থেকে লাভবান হবেন? সেটা বিচার মানুষই করুক।’