• যোগেশচন্দ্র নিয়ে রিপোর্ট তলব মুখ্যমন্ত্রীর, সরস্বতী পুজোর দিনে বিধিনিষেধ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে
    আনন্দবাজার | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজের ঘটনা নিয়ে এ বার রিপোর্ট চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নিজে এই কলেজের পুজোয় উপস্থিত থাকবেন। অন্য দিকে, রবি এবং সোমবার রাত ৮টার আগে খালি করে দিতে হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সব রকমের ঝামেলা এড়াতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে।

    শনিবার ব্রাত্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রিপোর্ট চেয়েছেন ওই কলেজের ঘটনা নিয়ে। আশা করি শান্তিপূর্ণ ভাবেই পুজো হবে। আমি নিজেও পুজোয় উপস্থিত থাকব।’’ একই ক্যাম্পাসে যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ এবং যোগশচন্দ্র চৌধুরী ডে কলেজের ক্লাস হয়। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতাও এই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। সেখানেই সম্প্রতি সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে অশান্তির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। গত সপ্তাহে যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের এক পড়ুয়া কলেজ চত্বরে সরস্বতীপুজো করতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, যে জায়গায় তাঁরা পুজো করে এসেছেন, তা দখল করেছে ডে কলেজ। অন্য দিকে ডে কলেজের দাবি, পুজোর জায়গায় অস্থায়ী নির্মাণ তৈরি করেছেন বহিরাগতেরা। অভিযোগ, সম্প্রতি কলেজে এই বহিরাগতদের ‘উপদ্রব’ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতীপুজোর অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ)-এর কড়া নজরদারিতে যোগেশচন্দ্র ডে এবং আইন কলেজের সরস্বতীপুজো হবে। পাশাপাশি, বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, বহিরাগতেরা যাতে কলেজে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই। কলেজ চত্বরে বহিরাগতদের তৈরি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    এই আবহেই ঝামেলা এড়াতে রবি এবং সোমবার রাত ৮টার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া হবে। রবি ও সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি ক্যাম্পাসে রাত ৮টার পর ছাত্রছাত্রীদের প্রবেশ নিষেধ। অর্থাৎ প্রতিমা বিসর্জন কিংবা অস্থায়ী নির্মাণ ভাঙা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ রাত ৮টার মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

    উল্লেখ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট ১৫৪টি কলেজ রয়েছে। যার মধ্যে যোগেশচন্দ্র কলেজও পড়ে। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ২০১৭ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদের ভোট হয়নি। ফলে নির্বাচিত প্রতিনিধি না-থাকায় পুজো নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে অশান্তির আবহ তৈরি হতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ছাত্রসংসদ নেই। ফলে পুজোর সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় সরাসরি কর্তৃপক্ষের উপর পড়তে পারে। সেই কারণে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেই এই দু’দিন রাত আটটার পর থেকে ক্যাম্পাস বন্ধ রাখা হচ্ছে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)