• ফরাক্কার স্কুলে মেরে প্রধান শিক্ষকের পা ভেঙে দিলেন সহকারী শিক্ষকরা
    বর্তমান | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: নিউ ফরাক্কা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিন স্কুলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি মিটিং চলাকালীন শিক্ষকরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করা হয়। রডের আঘাতে তাঁর পা ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন আক্রান্ত প্রধান শিক্ষক। যদিও অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সহকারী শিক্ষকরা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই সামাজিক মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ প্রসঙ্গে ফরাক্কা থানার পুলিস জানিয়েছে, কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। 


    জানা গিয়েছে, স্কুলের নতুন শিক্ষাবর্ষে ক্লাস নেওয়ার রুটিন তৈরি নিয়ে শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তা নিয়েই শুক্রবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের রুমে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং ডাকা হয়। মিটিংয়ে প্রধান শিক্ষক সহ উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি অরুণময় দাস, কমিটির সদস্য শিক্ষক তারিফ হোসেন, কিরণচন্দ্র দাস, সুজন স্বর্ণকার। সভা চলাকালীন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বচসা বাধে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তারপরই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষকরা। 


    প্রধান শিক্ষককে জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মেঝেতে ফেলে মারধর করা হয়। রড দিয়ে মেরে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিচালন সমিতির সভাপতি থামাতে পারেননি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ফরাক্কা থানার পুলিস। জখম প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে প্রথমে ফরাক্কা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স রে করে জানা যায়, শিক্ষকের বাঁ পা ভেঙে গিয়েছে। এছাড়াও বাঁ চোখে ও নাকে আঘাত লেগেছে।


    হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষকদের একাংশের অনিয়মের বিষয় জানতে পারি। তাঁরা আগের মতোই স্কুল পরিচালনা করতে চাইছিলেন। তাতে বাধা দেওয়ায় ওঁরা আমাকে স্কুল থেকে সরাতে চাইছেন। আমি কোনও অনিয়মের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারব না। শিক্ষকদের হামলায় আমার পা ভেঙেছে, নাক ও চোখের ক্ষতি হয়েছে। এখন দেখতে সমস্যা হচ্ছে। আমি ওঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করব। 


    ওই স্কুলের ‌এক শিক্ষক তারিফ হোসেন বলেন, মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়। প্রধান শিক্ষক তেড়ে মারতে আসার সময় চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন। ওইদিন স্কুলে কী হয়েছে সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।


    পরিচালন কমিটির সভাপতি বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বিরোধ বহুদিনের। আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিক বার ম্যারাথন মিটিং করেও সমাধান করতে পারিনি। ওঁদের মুখের যা ভাষা ও আচরণ তাতে তাঁরা শিক্ষক হওয়ার যোগ্য নন। 
  • Link to this news (বর্তমান)