কমল না সারের মূল্য, নির্মলার বাজেটে হতাশ শস্যগোলার চাষিরা
বর্তমান | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেটে একের পর এক ঘোষণা করছেন। টিভির পর্দার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন মেমারির সাতগেছিয়ার স্বপন মণ্ডল। এই বুঝি তিনি সারের দাম নিয়ে কিছু ঘোষণা করবেন। হয়তো ভর্তুকি বাড়াবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই টিভির পর্দায় ভেসে উঠবে। এমন আশা নিয়ে টিভির পর্দার সামনে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু বাজেট বক্তৃতা শেষ হয়ে গেলেও তেমন কিছু শোনা গেল না। তাতে শুধু স্বপনবাবু নন, রাজ্যের শস্যগোলার চাষিরা হতাশ হলেন।
গত কয়েক বছরে সারের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। চাষিদের লাভের অঙ্ক অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেই কারণেই তাঁরা আশা করেছিলেন এবার হয়তো কেন্দ্রীয় সরকার সারের উপর ভর্তুকি বাড়াবে। খণ্ডঘোষের নবগ্রামের চাষি সুকুমার বিট বলেন, এই বাজেটে চাষিদের কোনও লাভ হবে না। সার বা কীটনাশকের দাম না কমালে চাষে লাভ পাওয়া যাবে না। ১০:২৬:২৬, ডিএপি বা পটাশের মতো সারের দাম গত চার-পাঁচ বছরে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কোম্পানিগুলি সারের সঙ্গে ট্যাগ নিতে বাধ্য করছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির জন্যই তারা এই সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। সাতগেছিয়ার বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের চাষিদের কথা ভাবা উচিত ছিল। বেশি লোন পাইয়ে দিয়ে কোনও লাভ হবে না। চাষে তো এখন আর সেই ফায়দা নেই। লোন নিয়ে কী করব? তা শোধ করব কীভাবে? সারের উপর ভর্তুকি না বাড়ালে কখনোই চাষে লাভ হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার অসমে সারের কারখানা করবে বলে ঘোষণা করছে। অথচ এরাজ্যের দুর্গাপুরে সার কারখানা বন্ধ হয়ে রয়েছে। সৎ উদ্দেশ্য থাকলে তারা এই বন্ধ কারখানা চালু করতে পারত। তাতে এলাকার অনেকেরই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া যেত।
চাষিদের দাবি, আলু বা ধান চাষের মরশুমে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ সার রাজ্যে পাঠায় না। একশ্রেণির ব্যবসায়ী তার ফায়দা তোলে। তারা এমআরপির চেয়ে অনেক বেশি দামে চাষিদের সার নিতে বাধ্য করে। রাজ্যে কারখানা থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ সারের জোগান পাওয়া যেত। পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষক বাঁচাও সংগঠনের নেতা অনিরুদ্ধ কুণ্ডু বলেন, সারের দাম কমানোর দাবি নিয়ে আমরা বহুদিন ধরে আন্দোলন করছি। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়টিতে মানবিক হতে পারত। তারা কৃষিক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ঘোষণাও করেছে বাজেটে। কিন্তু তাতে এরাজ্যের কৃষকের খুব বেশি লাভ হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার চাষিদের ভালো চাইলে সারের উপর ভর্তুকি বাড়াত।