মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রাম নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দড়ি টানাটানি
বর্তমান | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম এবং আউশগ্রাম নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে জোর দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। আগে এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের সংগঠন দেখভাল করতেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি জেলে যাওয়ার পর এই তিন এলাকা পূর্ব বর্ধমান সংগঠনিক জেলার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। ফের এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব অনুব্রতবাবুকেই দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অনুগামীরা দাবি করছেন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি অডিওতে(যার সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান) অনুব্রতবাবুকেও এমনই দাবি করতে শোনা যাচ্ছে। তাঁর অনুগামীরা এই অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে উল্লাস করতে থাকেন। ‘এবার খেলা হবে’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কেউ কেউ বিরোধী গোষ্ঠীকে হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন। যদিও এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের সাংগঠনিক ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের দাবি।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট বা কেতুগ্রামের দায়িত্ব বদল হচ্ছে বলে শুনিনি। কী অডিও বা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে জানি না। এবিষয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রাম দেখতে বলেছেন। পাশাপাশি বড়ঞায় যেতে বলেছেন। মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা অপূর্ব চৌধুরী বলেন, এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব অনুব্রত মণ্ডলকে দেওয়া হয়েছে। সেকথা তিনি আমাকে জানিয়েছেন। পরবর্তীতে জেলার মিটিংয়ে হয়তো আমাদের তিনি ডাকতে পারেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে শাসকদল ব্যাপক ভোটে লিড পায়। তারপরও শাসকদলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। একসময় অনুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বিশেষ করে আউশগ্রামে তা বেশি করে সামনে আসে। একসময় অনুব্রতবাবুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক নেতা অন্যপক্ষের দিকে ঝুঁকে যান। বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি অনুব্রতবাবুর বিরোধীপক্ষের লোকজনকে আমন্ত্রণ জানান। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাইরের কাউকে টিকিট দেওয়া যাবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আউশগ্রামের বিধায়ক অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তিনি এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নন। একইভাবে মঙ্গলকোটেও শাসকের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। ওই অডিও ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এক কর্মীকে মারধরও করা হয়।
তৃণমূলের এক নেতা বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কিছুই ঘোষণা হয়নি। ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের সংগঠন বর্ধমানের জেলা নেতৃত্বই দেখবে। অনুব্রতবাবু ছাড়াই গত লোকসভা নির্বাচনে ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে দল সাফল্য পেয়েছে। সংগঠন ভালোভাবেই এগিয়ে চলছে। এখন আবার ক্ষমতা হস্তান্তর হলে নতুন করে অস্থির পরিবেশ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব সেটা ভালোভাবেই জানে। অন্য গোষ্ঠীর আর এক নেতা বলেন, ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে অনুব্রতবাবু সংগঠন তৈরি করেছিলেন। ওই তিন এলাকা সিপিএমের দুর্গ ছিল। তিনি সংগঠনের দায়িত্ব পেলে খারাপ কিছু হবে না।