যাত্রীবান্ধব নীতি লাগু করতে এবার অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলির সফ্টওয়্যারেও নজরদারি চালাবে রাজ্য
বর্তমান | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোনওরকম ‘লুকোচুরি’ চলবে না! এবার অ্যাপ ক্যাব সংস্থার অন্দরমহলেও নজরদারি চালাবে রাজ্য সরকার। যাত্রীদের বিবিধ হয়রানির অভিযোগ ওঠে ক্যাব সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে ক্যাব সংস্থাগুলিকে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংস্থাগুলির সফ্টওয়্যারে রাজ্য সরকারের ‘অ্যাক্সেস’ থাকবে। এর অর্থ, সরকারি কর্তারা এক ক্লিকেই ওলা-উবেরের মতো সংস্থার সফ্টওয়্যারে ঢুকে পরিষেবা পরিচালনার খুঁটিনাটি বিষয়ও দেখতে পাবেন। পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘আগে অ্যাপ ক্যাব নিয়ন্ত্রণে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা ছিল না। এখন রাজ্যজুড়ে লাগু হয়েছে অ্যাপ ক্যাব নীতি। এর মূল লক্ষ্য যাত্রী ও চালক, উভয়ের স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করা। রাজ্য সরকার যাত্রীবান্ধব অ্যাপ ক্যাব নীতি ঘোষণার পরই টনক নড়েছে বেসরকারি সংস্থাগুলির। এতদিন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি তাদের নথিভুক্ত গাড়ির সংখ্যা কম করে দেখাত বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে রাজস্ব হারায় নবান্ন। পাশাপাশি, যাত্রীদের সঙ্গে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় এড়িয়ে যেত সংস্থাগুলি। সংস্থাগুলির গাড়ি পরিচালনার ডিজিটাল ঘরে রাজ্য যে কোনও সময় ঢুকে পড়তে পারায় যাত্রী এবং ক্যাবচালক, উভয়েরই সমস্যার সুরাহা হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। উল্লেখ্য, সেই রাজ্যের ক্যাব নীতিতে বলা হয়েছে, ৬০ দিনের মধ্যে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলিকে নতুন করে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে লাইসেন্স ফি ধার্য করা হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ যে সংস্থার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইন ক্যাব নথিভুক্ত হবে, তাদের এই টাকা সরকারের কাছে জমা করতে হবে। একইভাবে লাইসেন্স রিনিউ, ডুপ্লিকেট লাইসেন্স কিংবা ঠিকানা বদল করতে আড়াই হাজার টাকা ফি দিতে হবে। সিকিওরিটি ডিপোজিট হিসেবে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলিকে সরকারের ঘরে কমপক্ষে এক লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা জমা রাখতে হবে। জানা গিয়েছে, এসব বিধি রাজ্যজুড়ে অ্যাপ ক্যাবগুলি মেনে চলছে কি না, তা যাচাই করবে পরিবহণ দপ্তর। প্রয়োজনে পুলিসি নজরদারি বাড়ানো হবে। সুসংহত নীতি কার্যকর হলেই অ্যাপ ক্যাব নিয়ে যাত্রীদের নিয়মিত অভিযোগের বহর অনেকটা কমবে বলে আশাবাদী পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা।