নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইলে আসক্তি বেড়েছে। কমেছে বই পড়ার অভ্যাস। সেই আসক্তি কাটানো সহজ হচ্ছে না। অভিভাবকরা সন্তানদের বকাবকি করলে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে ক্রমশ। এবার নতুন প্রজন্মকে বার্তা দিতেই থিম বানিয়েছে মধ্যমগ্রামের একটি পুজো কমিটি। শ্রীনগরের বিবেকানন্দ প্রথম সরণির গ্রেট ইউনাইটেড ক্লাব সরস্বতী পুজোর থিম করেছে ‘মাটির ঘরে শিক্ষার আলো’। সরস্বতী এখানে আটপৌরে পোশাকে। তিনি স্কুলের বাচ্চাদের থেকে এক হাতে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছেন। অন্য হাতে তুলে দিচ্ছেন বই। বিদ্যার দেবী তাঁর প্রিয় পড়ুয়াদের বলছেন ‘ফোন ছাড়, বই ধর’।
ইউনাইটেড ক্লাবের সরস্বতী বন্দনার এবার দ্বিতীয় বছর। তারা প্রস্তুতি শুরু করেছিল চারমাস আগেই। যামিনী রায়ের ছবির প্রিন্ট সংগ্রহ থেকে শুরু করে অন্যান্য সামগ্রী জোগাড় করেছেন উদ্যোক্তারা। তারপর গত একমাস ধরে চলেছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। থিম ভাবনা রাজু চন্দ্র’র। বিবেকানন্দ প্রথম সরণির ধারে প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। বাঁশ, প্লাই, প্লাস্টিকের চামচ, ফাইবার, সহজপাঠ, অ, আ, ক,খ অক্ষর দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। আকারে ছোট হলেও মণ্ডপসজ্জা অন্যরকম। উদ্যোক্তা রাজু চন্দ্র বলেন, ‘এখন পড়ুয়াদের মধ্যে মোবাইলের নেশা মারাত্মক। এই আসক্তির কারণে বই পড়ার অভ্যাস কমে গিয়েছে। সেই আসক্তি থেকে সরিয়ে আনার জন্যই মণ্ডপ এমনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।’
অন্যদিকে, গোবরডাঙার খাঁটুরা উত্তরপাড়ার সরস্বতী পুজো কমিটির থিম ‘মা আসছে মনুমেন্টে’। এবার ৬৩ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে পুজো। এখানে দেবী অধিষ্ঠিত হচ্ছেন ৮৫ ফুট উচ্চতার মনুমেন্টে। মূর্তির উচ্চতা ১০ ফুট। প্যান্ডেল তৈরি ফাইবার দিয়ে। এক থেকে চার জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি সন্ধ্যায় পুজো কমিটির পক্ষ থেকে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলার পাশাপাশি ত্রিপুরা থেকে শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন। বাগদেবীর আরাধনায় প্রায় শতাধিক বিদ্যার্থীকে শিক্ষা সামগ্রী তুলে দেবে কমিটি। উদ্যোক্তাদের কথায়, ‘এই পুজো মূলত পাড়ার পুজো বলে পরিচিত। তাই পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা অক্লান্ত পরিশ্রম করে পুজোকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। সাজানো হয়েছে আধুনিক আলোকসজ্জা দিয়ে।’