• ‘সিনিয়র’ আইনজীবী বিতর্কে প্রশ্ন লবি-সুপারিশে, মামলা সুপ্রিমেও
    এই সময় | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: কলকাতা হাইকোর্টে একসঙ্গে ৮১ জনকে সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার নেপথ্যে সুপারিশ–তত্ত্ব নিয়ে এখনও জোর চর্চা চলছে। কী ভাবে এতজনকে একসঙ্গে সিনিয়র হিসেবে বাছাই করা হলো, তা নিয়ে হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করেও জবাব না পেয়ে এক আইনজীবী মামলারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    একই ভাবে দিল্লি হাইকোর্টে এক সঙ্গে ৭০ জনকে সিনিয়র আইনজীবীর স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে জল ঘোলা শুরু হয়েছে। তবে এই নিয়ে দায়ের মামলা শুক্রবার শুনতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টে অন্য একটি মামলায় সিনিয়র আইনজীবীর স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘লবিং’ নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং। প্রসঙ্গত, ইন্দিরার দায়ের করা মামলার জেরেই ২০১৭ সালে সিনিয়র আইনজীবী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা আনতে বড়সড় নির্দেশ দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত।

    সিনিয়র আইনজীবী ও অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সংক্রান্ত একটি মামলায় শুক্রবার বিচারপতি অভয় এস ওকা এ বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাশিহর বেঞ্চে শুনানিতে আইনজীবী ইন্দিরা সিনিয়র গাউন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারপতিদের কাছে ‘লবি’ করা বন্ধে পদক্ষেপের আবেদন করেন। তাঁর পরামর্শ, কর্মরত বিচারপতিরা সিনিয়র আইনজীবী স্বীকৃতির জন্যে সুপারিশ করা বন্ধ করুন।

    তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এই লবিং বন্ধ করতেই তাঁর দায়ের করা মামলায় তিন বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিয়েছিল ২০১৭–য়। কিন্তু তার পরেও সিনিয়র আইনজীবীর তালিকা তৈরিতে চোরা স্রোতের মতো লবিং এবং সুপারিশ প্রভাব ফেলে চলেছে। বিচারপতি ওকাও সিনিয়র গাউনের ক্ষেত্রে প্রকৃত যোগ্যদের বাছাইয়ে জোর দেন।

    কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় আট বছর পর সিনিয়র আইনজীবী বাছাইয়ের জন্যে গত বছরের শেষ দিকে ৩৪১ জনের নাম বাছাই করে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। তার মধ্যে ৮১ জনের তালিকা তৈরি হয়। এই তালিকায় থাকা বহু নাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীদেরই একাংশ। আবার বহু প্রকৃত যোগ্য আইনজীবী আবেদন না করায় স্বীকৃতি পাননি। তাঁদের যুক্তি, বিচারপতি হিসেবে নাম সুপারিশের সময়ে হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ নিজেরা তালিকা তৈরি করেন।

    সেখানে যদি আবেদন না করতে হয়, তা হলে সিনিয়র স্বীকৃতি পাওয়ার জন্যে কেন যোগ্যদের নিজে থেকে আবেদন করতে হবে? এই যুক্তি সুপ্রিম কোর্টের মামলায় তুলেছেন আদালত–বান্ধব আইনজীবী (এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি) এস মুরলীধরও। সুপ্রিম কোর্টে মামলার গতিপ্রকৃতি কী হয়— সে দিকে চোখ রেখে কলকাতা হাইকোর্টে ঢালাও সিনিয়র চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেই আইনজীবী, যিনি আরটিআই করে জবাব পাননি।

  • Link to this news (এই সময়)