• সব্জি সস্তা, ছেঁকা ফুল-ফল প্রতিমায়, মাথায় হাত উদ্যোক্তাদের
    এই সময় | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • প্রশান্ত ঘোষ, ভাঙড়

    শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে এ বছর সরস্বতীর আরাধনা হবে দু’দিন ধরে। আজ, রবিবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত পুজো হবে ঘরে ঘরে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হবে বীণাপাণির আরাধনা। কিন্তু একমাত্র ভোগের খিচুড়ি ও লাবড়ার সব্জির দাম সস্তা হলেও বাকি সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। ‌উধাও শীতে বাজারের গরমে কপালে ঘাম জমছে পুজো উদ্যোক্তাদের।

    দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর, নরেন্দ্রপুর থেকে শুরু করে রাজারহাট, ভাঙড়, জীবনতলা সর্বত্রই একই অবস্থা। ফুল, ফল, পুজোর যাবতীয় উপাচারের দাম লাগামছাড়া। অন্যান্য বছরের থেকে এ বছর দাম বেড়েছে প্রতিমা, পুরোহিত সবকিছুরই। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্রতিমার। এক ফুট উচ্চতার ছাঁচের প্রতিমার দাম নেওয়া হচ্ছে তিনশো থেকে চারশো টাকা।

    সাড়ে তিন ফুট উচ্চতার প্রতিমার দাম দেড় হাজার টাকা। সোনারপুরের শিল্পী গোপাল পাল বলেন, ‘যে ভাবে কাঁচামালের দাম বাড়ছে এবং কারিগরদের মজুরি বাড়ছে তাতে প্রতিমার দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই। তবে আগের থেকে প্রতিমার চাহিদা এবং বিক্রি দুটোই বেড়েছে।’

    দক্ষিণা বেড়েছে পুরোহিতেরও। গত ২৫ বছর ধরে পুজো করে আসছেন রাজারহাটের অধীর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ সবকিছুই কিনবেন বেশি দাম দিয়ে, কিন্তু পুরোহিতকে পয়সা দিতে গেলেই যত কষ্ট! এ বছর বাড়ি অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছি। আর বারোয়ারি পুজোর ক্ষেত্রে হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।’

    সব রকম ফলের দরই ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। চিঁড়ে, মুড়কি, বাতাসা, নাড়ু, খই সবকিছুই আকাশছোঁয়া দর বলে আক্ষেপ করলেন ভাঙড় বাজারের গৃহবধূ সহেলী মণ্ডল। চন্দনেশ্বরের গৃহবধূ জয়িতা মিত্র বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও যে আপেল ১০০ টাকার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছিল সেটা এখন ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। পুজোর প্রসাদের জন্য ফল কেনার মতো অবস্থা নেই।’ কদমা, মঠও চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না। বাজার থেকে উধাও কালির দোয়াতও।

    পুজোর প্রধান উপাচার গাঁদা ফুলেও ছেঁকা লাগছে উদ্যোক্তাদের। পোলেরহাট, ঘটকপুকুর, চন্দনেশ্বর বাজারে এক কুড়ি (২০টি ফুলের মালা) মালার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। একটি মালা কিনতে গেলে দিতে হচ্ছে ৩০ টাকা। তাই অনেকেই মণ্ডপ সাজানোর জন্য কৃত্রিম মালা কিনছেন। মাম্পি ঘোষ নামে এক গৃহবধূ বললেন, ‘বাজার থেকে প্লাস্টিকের ফুলের মালা কিনেছি। বছর বছর একই মালা দিয়ে সরস্বতী লক্ষ্মী সমস্ত প্রতিমা সাজানো যাবে।’

    ভোগের জন্য মুগডাল, সর্ষের তেলের দামও বেশ চড়া। তবে ফুলকপি, বেগুন, পালংশাক, আলুর দাম অনেকটাই পড়ে গেছে। ১০০ টাকায় থলে ভর্তি সব্জি কেনা যাচ্ছে। রাজারহাটের একটি ক্লাবের কর্তা সোমনাথ মণ্ডল বলেন, ‘বাজারদর অনুযায়ী চলতে হবে। পুজোর প্রসাদ কম দিয়ে খিচুড়ি, পাঁচমিশেলি সব্জির তরকারি বেশি বেশি করে খাওয়াব।’

  • Link to this news (এই সময়)