বাড়িতে মজুত ধান বাজারে বিক্রি করে ফের মদ খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন স্বামী । এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী সুলেখা মাল। এই নিয়ে শনিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র বচসাও হয়। অভিযোগ, রাগের মাথায় আচমকাই স্বামী বিকাশ মালের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন সুলেখা। সেই আঘাতেই মৃত্যু হয় বিকাশের। বাঁকুড়ার ওন্দা থানার কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিনোদনগরের এই ঘটনায় সুলেখাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মৃতের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সুলেখাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দোরজি। রবিবার বাঁকুড়া জেলা আদালত সুলেখার সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর, বিকাশ ছিলেন দিনমজুর। মদের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত ছিলেন তিনি। এই কারণে বেশ কয়েক বছরে তাঁর কাজকর্মও লাটে ওঠে। তিন ছেলেমেয়েকে কার্যত একা হাতে বড় করেছেন তাঁর স্ত্রী। কষ্ট করে বড় মেয়ের বিয়েও দেন সুলেখা। সংসার চালাতে কয়েকটি ছাগল কিনে তা পালন করে উপার্জনের রাস্তা তৈরি করেছিলেন সুলেখা। সম্প্রতি সেই ছাগল চরাতে যাওয়ার নাম করে সেগুলি বেচে দিয়ে সেই টাকায় মদ খেয়ে নেন বিকাশ।
ছাগল বিক্রি করে পাওয়া টাকা শেষ হওয়ার পরে ঘরে মজুত বস্তা তিনেক ধান বিক্রি করে মদ খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বিকাশ। বিক্রির উদ্দেশে সেই ধান বিকাশ বাড়ির বাইরে নিয়ে যেতেই তা নজরে পড়ে তাঁর স্ত্রীর। পরিবারের একমাত্র সম্বল ওই ধান বিক্রিতে বাধা দিলে বাড়ির উঠোনেই দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরই মধ্যে সুলেখা বড় একটি লাঠি তুলে বিকাশকে মারধর করতে শুরু করেন। জানা গিয়েছে, স্ত্রীর লাঠির আঘাত মাথায় লাগতেই লুটিয়ে পড়েন বিকাশ। ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই খবর পেয়ে শনিবার রাতেই সুলেখা মালকে গ্রেফতার করে ওন্দা থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার সুলেখাকে তোলা হয় বাঁকুড়া জেলা আদালতে। তাঁকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশের দাবি, স্বামীকে খুনের কথা কবুল করেছেন সুলেখা। অনেক দিনের জমা রাগ থেকেই স্বামীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।