রাজ্য জুড়ে বাগদেবীর আরাধনা। ছোট্ট একটি সরস্বতীর মূর্তি তৈরি করেছেন নদিয়ার এক পড়ুয়া। ওই মূর্তির উচ্চতা মাত্র ৪ সেন্টিমিটার। এই মূর্তির অবশ্য পুজো হবে না। নেহাতই শখের বশে ওই মূর্তি তৈরি করেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আকাশ দত্ত।
এখন দর্শন নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করছেন আকাশ। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে মাস্টার ডিগ্রিতে পড়াশুনা করা প্রথম বর্ষের ছাত্র আকাশ মূর্তি তৈরি বা শিল্পকর্ম নিয়ে কোথাও প্রথাগত শিক্ষা নেননি। নদিয়ার শান্তিপুরের বাসিন্দা আকাশ এর আগেও এই রকম ক্ষুদ্র মূর্তি এবং শিল্পকর্ম করেছেন। তিনি করেছেন দেড় ইঞ্চির মাটির দুর্গার মূর্তি। মটর, মুসুরি ডাল এবং সাদা সরষের উপর ভারতের মানচিত্র আঁকার পাশাপাশি চক কেটে স্বামী বিবেকানন্দর মূর্তিও তৈরি করেছেন আকাশ। এ বার তিনি গড়েছেন সরস্বতীর মূর্তি। এই মূর্তি তৈরি করতে কাদা, মাটি ছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে ফেব্রিক রঙ।
আকাশ জানিয়েছেন, এই মূর্তি করতে তাঁর সময় লেগেছে মাত্র চারদিন। তাঁর দাবি, চার ইঞ্চি উচ্চতার এই মূর্তির গড়তে আতশ কাচের ব্যবহার করেননি।
শান্তিপুরের মদনগোপাল রোডের বাসিন্দা আকাশ জানান, তাঁর বাবার তাঁতের ব্যবসা আছে। পড়াশোনার ফাঁকে সেই কাজে বাবাকেও সাহায্য করেন তিনি। এই সবের ফাঁকেই সময় পেলেই তিনি বসে পড়েন শিল্পকর্ম নিয়ে।
কেন এ বার এই মূর্তি তৈরি করেছেন তাও জানিয়েছেন আকাশ। তাঁর ইচ্ছা ছিল বুক অব রেকর্ড-এ নাম তুলতে। তাঁর দাবি, সেখানে নাম তোলার জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছিল। টাকা দিয়ে নিজের নাম তুলতে চান না তিনি। আকাশ বলেন, ‘আমি চাই, অর্থের বিনিময়ে নয়, নিজের যোগ্যতা এবং কাজের বিচারেই সম্মান পান শিল্পীরা। মা সরস্বতীর কাছে আমি এই প্রার্থনাই করছি।’ সুযোগ পেলে আগামী দিনে শিল্পকর্ম নিয়েও পড়াশোনার ইচ্ছা আছে তাঁর।
তবে শুধুমাত্র আকাশই নন, অভিনব সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছেন ওই এলাকারই বাসিন্দা কালাচাঁদ কর। তিনিও একজন তাঁত শিল্পী। বয়স একটু বেশি হলেও একই পাড়ায় থাকার সুবাদে আকাশের সঙ্গে বন্ধুত্বর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কালাচাঁদের। নিজের কাজের ফাঁকে তিনিও একটি সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছেন। থার্মোকল দিয়ে তৈরি এক ফুট উচ্চতার সেই প্রতিমার ওজন মাত্র ২০ গ্রাম।