আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মনিরুল ইসলামকে মারধর করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই স্কুলেরই এক সহকারী শিক্ষককে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করল ফরাক্কা থানার পুলিশ। ধৃত ওই শিক্ষকের নাম সুজন স্বর্ণকার। তিনি ওই স্কুলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, "গোটা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।"
প্রসঙ্গত ফরাক্কা হাই স্কুলে নতুন অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল দায়িত্ব নেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তৈরি করা রুটিন নিয়ে কিছু অভিযোগ থাকায় গত শুক্রবার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মনিরুল ইসলামের কাছে ওই স্কুলের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক লিখিত অভিযোগ জানান। এরপর ওই দিনই প্রধান শিক্ষক নতুন রুটিন বাতিল করে পুরনো রুটিন অনুযায়ী ক্লাস চালু করে দেন।
অভিযোগ এর কিছুক্ষণের মধ্যে ওই স্কুলেরই চারজন সহকারী শিক্ষক, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অরুন্ময় দাসকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢোকেন। দু'পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সময় প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মনিরুল ইসলামকে ব্যাপক মারধর করা হয়। সহ শিক্ষকদের মারে প্রধান শিক্ষকের বাঁ পা ভেঙে যায়। তাঁর শরীরের আরও একাধিক জায়গায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তিনি মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।
শুক্রবার সন্ধে নাগাদ আহত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী মৌসুমী খান ফরাক্কা থানায় চার শিক্ষক-মহম্মদ তারিফ হোসেন ,কিরণ চন্দ্র দাস, সোহরাব আলী সুজন স্বর্ণকার-সহ স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অরুন্ময় দাসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ফরাক্কা থানার পুলিশ ওই চার শিক্ষক এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীকে অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আঘাত করা, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর শুক্রবার রাতে ফরাক্কার একটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক সুজন স্বর্ণকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি মহম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, "আমার শরীরের যন্ত্রণা আরও বেড়েছে। চিকিৎসকরা আমাকে মাথার সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি শুনেছি একজন শিক্ষক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমি চাই বাকি অভিযুক্তরাও গ্রেপ্তার হোক। তবে আমি গোটা ঘটনার কোনও রাজনীতিকরণ চাই না।"
ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন,"আইন আইনের পথে চলবে। আমরা গোটা ঘটনায় দলীয়ভাবে কোনও হস্তক্ষেপ করব না ।আমি আহত প্রধান শিক্ষকের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।"