ছোট মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছেন জামাই! চার মাস অতিক্রান্ত। এখনও তাঁর ২১ বছরের কন্যা কোথায় জানেন না। শুধু জানেন, বড় মেয়ের স্বামী তাঁকে ‘অপহরণ’ করেছেন! সেই মেয়েকে ফেরত চেয়ে এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন টিটাগড়ের এক ব্যক্তি। মামলাকারী জানান, তাঁর বড় জামাই পুলিশে কাজ করেন। দমদম সংশোধনাগারে কর্তব্যরত।
জানা গিয়েছে, মামলাকারীর ছোট মেয়ে ব্যারাকপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়েন। গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ! রোজকার মতো সে দিনও ওই তরুণী কলেজ যান। তবে বাড়িতে মোবাইল ফেলে রেখেই চলে গিয়েছিলেন। বিকেলের দিকে নিজের ফোনে ফোন করে জানান, টিউশন আছে। বাড়ি ফিরতে দেরি হবে। মামলাকারীর দাবি, সে দিন রাত ১০টা নাগাদ আবার ফোন করেন মেয়ে। মাকে জানান, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু রাত বাড়লেও মেয়ে ফেরেননি। যে নম্বর থেকে ফোন আসে, সেই নম্বরে ফোন করেও লাভ হয়নি। বন্ধ ছিল ফোন।
মেয়ে বাড়ি না-ফেরায় অসহায় বাবা-মা নানা দিকে খোঁজখবর শুরু করেন। কিন্তু কোথাও কোনও খোঁজ মেলেনি। অগত্যা টিটাগড় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন ওই তরুণীর বাবা। অভিযোগ, তার পর আর পুলিশের তদন্ত এগোয়নি। মামলাকারীর দাবি, দিন কয়েক পরে স্থানীয় এক বাসিন্দা তাঁকে জানান, তাঁর বড় মেয়ের স্বামীর সঙ্গে ব্যারাকপুর গান্ধী ঘাটে ছোট মেয়েকে দেখেছেন! শোনার পরেই জামাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মামলাকারী। কিন্তু সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন মামলাকারীর জামাই। এমনকি, ছোট শ্যালিকাকে খুঁজতে তিনি কোনও সাহায্যও করতে চাননি বলে দাবি।
জামাই অস্বীকার করায় সব সন্দেহ যায় তাঁর উপরই। মামলাকারী তার পর বড় জামাইয়ের নামে আবার টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, তার পরও পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি। এমনকি, মেয়েকেও খোঁজার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগী হয়নি।
মামলাকারীর আরও দাবি, আরও এক প্রতিবেশী তাঁদের জানিয়েছেন, মাস কয়েক আগে তাঁর জামাই এবং ছোট মেয়েকে একসঙ্গে একটি হোটেলে ঢুকতে দেখেছেন। ওই হোটেলে গিয়েও খোঁজখবর করেন মামলাকারী। তাঁর দাবি, হোটেলের এক কর্মচারী ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। সেই বিষয়টিও তিনি পুলিশকে জানান। তার পরও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল, এমন অভিযোগ তুলেই এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ‘নিখোঁজ’ তরুণীর বাবা। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভবনা রয়েছে।