৫৮ বছরে শাপমুক্তি! শান্তিপুরে ৩ দিনেই মিলল বিদ্যুতের আলো, মমতার দুয়ারে সরকারে মুগ্ধ লক্ষ্মীতলা পাড়া
বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: দুয়ারে সরকারের সৌজন্যে ৫৮ বছর বয়সে এই প্রথম ঘরে বিদ্যুতের আলো পেলেন কৃষ্ণা সরকার। প্রত্যন্ত গ্রাম নয়, লক্ষ্মীতলা পাড়া জায়গাটা শান্তিপুর শহরেই। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এই পাড়ার ৫৮ বছরের প্রৌঢ়া কৃষ্ণা সরকার জন্ম থেকে এখানকার বাসিন্দা। ছোট্ট জীর্ণ বাড়িখানা দেখলেই বোঝা যায়, আর্থিক সম্বল বলতে তাঁর কিছুই নেই। বিয়ে করেননি, তাই পরিবার কেন, তিন কূলে কেউ নেই। সম্পত্তি বলতে ওই বাড়ি আর খান কয়েক ছাগল। আয়ের পথও ওই ছাগলগুলো আর বিনামূল্যের রেশন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, জীবনের দুই তৃতীয়াংশ পার করার পরেও বিদ্যুৎ কী জিনিস, তা জানতেই পারেননি কৃষ্ণাদেবী। দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে প্রৌঢ়ার হাতে সেই আবেদন পত্র দেখে হোঁচট খেয়েছিলেন উল্টো দিকে বসে থাকা সরকারি আধিকারিক নিজেও। করুণ কণ্ঠে মহিলা সেখানে জানান, এ জন্মে কী আর বিদ্যুৎ পাব না? অবশ্য দুয়ারে সরকারের ‘দুয়ার’ পর্যন্ত পৌঁছতে তাঁকে সাহায্য করেন শান্তিপুরের বাসিন্দা তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত ঘোষ। মহিলাকে দিয়ে ক্যাম্পে আবেদন জমা করানোর পর বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার খরচও তিনিই দিয়েছেন।
২৮ জানুয়ারি, দুয়ারে সরকারে আবেদনের পর গুনে গুনে তিনদিন। বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজন পৌঁছে যান কৃষ্ণাদেবীর বাড়িতে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হল। বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করে উঠল তাঁর ঘর। অনুভূতিটা ঠিক কী রকম? প্রশ্ন শুনে চোখ ভিজে উঠল প্রৌঢ়ার। কৃষ্ণাদেবী বলেন, আমি অত লেখাপড়া জানি না। কোনওদিন কেউ আমাকে দিয়ে করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেনি। জয়ন্তই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে। খুব ভালো লাগছে। এই ভিটেতে জন্মেছি যখন তখন আলো ছিল না। শেষটা এবার বিদ্যুতের আলোতেই হবে। জয়ন্তবাবু বলেন, মানবিক কারণেই বিষয়টি জানার পর এগিয়ে এসেছি। মানুষ হিসাবে অন্যের পাশে এইভাবেই তো এগিয়ে যাওয়া উচিত। এতে কৃতিত্বের কিছু নেই।