নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: রাজপাট আর নেই। তবে রাজ আমলের রেওয়াজ আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। নিয়ম মেনে এখনও শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে হেতমপুর সরস্বতী পুজো মেলার আয়োজন হয়। রবিবার হেতমপুর দক্ষিণা কালীতলায় এই মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা হল। এসআরডিএ’র চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল প্রদীপ জ্বালিয়ে মেলার উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, পঞ্চায়েতের প্রধান টুম্পা বাউড়ি, উপপ্রধান শেখ সবুর আলি, মেলা কমিটির সম্পাদক অভিনিবেশ রায়। এছাড়া রাজ পরিবারের সদস্য সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের দিন থেকেই শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহাসিক মেলায় মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে।
রাজ আমলে ১৮৪০সালে হেতমপুরের রাজা বিপ্রচরণ চক্রবর্তীর হাত ধরে মেলার সূচনা হয়। সেই থেকে রাজ পরিবারের তরফেই মেলার আয়োজন হতো। তবে রাজপাটের অবসানের পর ১৯৮৭সালে হেতমপুর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ মেলার দায়িত্ব তুলে নেয়। তারপর থেকে প্রতি বছর পঞ্চায়েতের তরফে মেলা হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। দূর-দূরান্ত থেকেও বহু মানুষ এই মেলায় যোগ দেন। পাঁচদিনের এই মেলায় প্রায় ২২০টি স্টল রয়েছে। মুর্শিদাবাদ, মালদহ সহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এই মেলায় পসরা সাজিয়েছেন। মেলাকে কেন্দ্র করে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দর্শকদের মনোরঞ্জনে পুতুল নাচের আয়োজন রয়েছে। সেইসঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে বাউল গানের আসর বসবে। খুদেদের জন্য একাধিক প্রতিযোগিতা রয়েছে। মেলা কমিটির সম্পাদক বলেন, এই সরকারের আমলে শতাব্দীপ্রাচীন মেলা অন্য মাত্রা পেয়েছে। মেলা আরও বড় হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় এই মেলা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল রাজ পরিবারকে ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, মানুষের কাজ করুন। মানুষকে সেবা দিন। তবেই আপনার ভালো হবে। নিজের সেবা করবেন না। • নিজস্ব চিত্র