• সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে প্রতারণা! পুলিস অফিসারের পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হুমকি ফোন
    বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: দিল্লি পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চ বা সিবিআই অফিসার পরিচয়ে নয়, এবার এই রাজ্যের ডিএসপি, আইসি, ওসি সেজে প্রতারণা শুরু হয়েছে। তাদের সফট টার্গেট স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানা এলাকায় দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ী তাঁদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এমনটাই দাবি সেখানকার পুলিস কর্তাদের। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। পুলিস জানিয়েছে, মোবাইল নম্বর খতিয়ে দেখা গেছে পুলিসের পরিচয় ভাঁড়ানো দুষ্কৃতীরা কলকাতা লাগোয়া এলাকার। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে তারা। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার কাজ শুরু করেছে পুলিস। 


    দিল্লি পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চ বা বাইরের রাজ্যের পুলিসের বড় অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটে চলেছে। এছাড়া রয়েছে ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ঘটনা। পুলিসের পক্ষ থেকে এই নিয়ে ধারাবাহিক সচেতনতা চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে এবার এই রাজ্যেরই পুলিস অফিসারের পরিচয় দিয়ে প্রতরণার নয়া ফাঁদ পেতেছে দুষ্কৃতীরা। বিশেষ করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করা হচ্ছে। সম্প্রতি মাড়গ্রাম থানা এলাকার দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তারা।


    পুলিস জানিয়েছে, ডিএসপি, আইসি এবং ওসির পরিচয় দিয়ে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ফোন করা হয়েছিল। বলা হয়, বছর দুয়েক আগে আপনি যে সোনা কিনেছিলেন সেগুলি চোরাই ছিল। এটা নিয়ে মামলা হয়েছে। আপনাকে একটা নোটিস পাঠানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট অফিসে হাজির না হলে ওয়ারেন্ট জারি হবে এবং জেল পর্যন্ত হতে পারে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে যান ব্যবসায়ীরা। পুলিসের দাবি, ওই দুই ব্যবসায়ী মনেই করতে পারেননি সেই সময় কোথা থেকে সোনা কিনেছিলেন। তবুও মান সম্মান, দোকানের সুনাম ও আইনি ঝামেলা এড়াতে তাদের শরণাপন্ন হয়ে পড়েন। আর তখনই তাঁদের মামলা রফা করার টোপ দেয় প্রতারকরা। বিশ্বাসযোগ্য ক঩রে তুলতে অল্প পরিমাণ টাকা দাবি করে। ঝামেলা থেকে পার পেতে সেই টাকা দেয় ওই ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ, পরে নানা কারণ দেখিয়ে মামলা রফা করার নামে দফায় দফায় টাকা দাবি করতে থাকে। এরপরই প্রতারণার ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছেন বুঝতে পেরে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন ওই ব্যবসায়ীরা। 


    পুলিস জানিয়েছে, মোবাইল নম্বর খতিয়ে দেখে জানতে পারেন কলকাতা লাগোয়া এলাকা থেকে পুলিসের অফিসার পরিচয় দিয়ে এই ব্যবসায়ীদের ফোন করা হয়েছিল। পুলিস চক্রটিকে ধরতে তদন্তে নেমেছে। 


    সেই সঙ্গে সেই ধরনের দুষ্কৃতীদের খপ্পরে যাতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ না পড়েন, সেজন্য ফেসবুকের মাধ্যমে জোর প্রচার শুরু করেছে পুলিস। মাড়গ্রাম থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম তাঁর ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় বলছেন, কোথাও কখন কী সোনা কিনছেন, বিক্রি করছেন তা অনেকের পক্ষে মনে রাখা সম্ভব নয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনাদের কাছ থেকে পুলিসের পরিচয় দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই আপনারা সতর্ক থাকবেন। দোকানের সোনা কেনাবেচার রেজিস্টার বজায় রাখুন। কেউ যদি ফোন করে ওয়ারেন্ট নোটিস পাঠানোর কথা বলে সেক্ষেত্রে বলবেন থানার মাধ্যমে পাঠাতে। ভয় পেয়ে এক টাকাও দেবেন না। প্রতারণার নয়া ফাঁদ পেতেছে দুষ্কৃতীরা। এই ধরনের ফোন কল এলে স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
  • Link to this news (বর্তমান)