ফের কুয়াশার বাধা, নবদ্বীপে চার ঘণ্টা বন্ধ ফেরি পরিষেবা
বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ফের ঘন কুয়াশার জেরে প্রায় সওয়া চার ঘণ্টা নবদ্বীপ, মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ ঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ রইল। সকালে দু’- একবার স্বরূপগঞ্জ থেকে নবদ্বীপ ঘাটের উদ্দেশ্যে নৌকো ছাড়লেও তারমধ্যে একটি নৌকা দিক নির্ণয় করতে না পেরে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে নদীর বুকে ঘুরপাক খায়। পরে মাঝির দক্ষতায় কোনও রকম নবদ্বীপ ফেরিঘাটে এসে পৌঁছয় নৌকোটি।
রবিবার ভোর থেকে ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মায়াপুর ও নবদ্বীপে ঘুরতে আসা পুণ্যার্থী, পর্যটক, নিত্যযাত্রীরা। সরস্বতী পুজোর দিন ছাত্রছাত্রীদের স্কুল কলেজে যেতে অসুবিধায় পড়তে হয়। শুধু নবদ্বীপ মায়াপুর নয়, ঘন কুয়াশার কারণে নবদ্বীপ ও স্বরূপগঞ্জের মধ্যেও নৌকো চলাচল বন্ধ ছিল। ভোর থেকে নবদ্বীপ, মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ এই তিনটি ফেরিঘাটে অপেক্ষা করেছেন অসংখ্য মানুষ। এদিন সকালে এতটাই ঘন কুয়াশা ছিল যে, নদীর কুল কিনারা দেখা যাচ্ছিল না। এ কারণে মাঝিরা নৌকো চালাতে সাহস পাননি। ঘন কুয়াশায় মাঝিদের পক্ষে দিক ঠিক রাখাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। প্রায় আন্দাজে নবদ্বীপ ফেরিঘাটে এসে পৌঁছে মাঝ নদীতে কুয়াশা বিপর্যয়ের কথা জানান নৌকোর মাঝি শুভঙ্কর বিশ্বাস।
তিওরখালি থেকে প্রতিদিন কাজের সন্ধানে আসতে হয় নির্মাণ শ্রমিক জাকির শেখকে। তিনি বলেন, স্বরূপগঞ্জ ঘাট থেকে নবদ্বীপ ঘাট আসতে যেখানে সময় লাগে পাঁচ মিনিট, এই কুয়াশার কারণে সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে নৌকোতে করে নদীর চারদিকে ঘুরে বেড়ালাম। কুয়াশার কারণে মাঝে মধ্যেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের মতো শ্রমজীবী মানুষকে। কীভাবে এই কুয়াশার সময়ে ফেরি পরিষেবা দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে ঘাট কর্তৃপক্ষের একটু চিন্তাভাবনা করা উচিত। এদিন পৌনে ১০টা থেকে নবদ্বীপ, মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ ঘাটের মধ্যে নৌকা ও লঞ্চ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। নবদ্বীপ ফেরিঘাট জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির সম্পাদক সুশান্ত হালদার বলেন, কী করব বলুন, উল্টোদিকের ফেরিঘাটের আলো দেখেই মাঝিরা দিক নির্ণয় করেন। আধুনিক প্রযুক্তির কোনও ব্যবস্থাই আমাদের নেই। আমরা জেলা পরিষদকে বার বার বলছি। ওঁরাও কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। দিক নির্ণায়ক যন্ত্র বসানো হলে কী হয়, সেটাই দেখার।
এদিন সকালে সপরিবারে কাটোয়া থেকে মায়াপুর ও নবদ্বীপ ঘুরতে এসেছিলেন গৃহবধূ রিম্পা পান। তিনি বলেন, কুয়াশার কারণে নৌকো, লঞ্চ কোনওটাই চলছে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছি। অথচ আজকেই আমাদের ফিরে যাওয়া। বর্ধমানের আলিশা বাস স্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ দেবলীনা চক্রবর্তী বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন নবদ্বীপ ও মায়াপুরে ঘুরতে এসেছি। দীর্ঘ সময় লঞ্চের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। কখন কুয়াশা কাটবে, লঞ্চ ছাড়বে জানি না। -নিজস্ব চিত্র