• দুয়ারে সরকারে ৩৭ প্রকল্পে সাড়ে সাত লক্ষ্যের আবেদন, সামাজিক সুরক্ষায় ৫ লক্ষ আর্জি
    বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নবম দুয়ারে সরকারে ব্যাপক সাড়া পড়ল নদীয়া জেলায়। সবমিলিয়ে মোট ৩৭টি প্রকল্পের জন্য সাড়ে সাত লক্ষের বেশি আবেদন জমা পড়েছে, বলে‌ জানা গিয়েছে। তবে ভালো সাড়া মিলেছে বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম প্রিয় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পকেই টেক্কা দিয়েছে বার্ধক্য ভাতা প্রকল্প। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের থেকে অনেক বেশি আবেদন জমা পড়েছে বার্ধক্য ভাতার জন্য। আবেদনের নিরিখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প জেলার মধ্যে তৃতীয় স্থানে। তবে সুপার হিট ‘সামাজিক সুরক্ষা যোজনা’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য নদীয়া জেলার প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ আবেদন করেছেন। এই প্রকল্পে রেকর্ড সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। 


    নদীয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘বিগত এক সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় দুয়ারে সরকারের শিবির বসেছিল। বহু ভ্রাম্যমাণ শিবিরের আয়োজন করেছিলাম। যে সমস্ত আবেদন জমা পড়েছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার কাজ চলছে।’


    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিনামূল্যে সামাজিক যোজনা প্রকল্পের জন্য মোট ৪ লক্ষ ৯৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। বার্ধক্য ভাতার জন্য ১ লক্ষ ৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য ৭৪ হাজার ১৬৬টি আবেদন জমা পড়েছে। স্বাস্থ্যসাথীর জন্য ১৮ হাজার ১৩৭টি, কৃষকবন্ধু প্রকল্পের জন্য ১৪ হাজার ১৬৩টি, আর্টিজান রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১০ হাজার ৩২২টি, বিধবা ভাতা প্রকল্পে ৮ হাজার ৮১৪টি, খাদ্যসাথী প্রকল্পে ৭ হাজার ৬৫১টি, এসসি-এসটি শংসাপত্রের জন্য ৪ হাজার ৫১৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়াও চাষের কাজে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ কেনা, মানবিক প্রকল্প, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্রেডিট লিঙ্কেজ, তফসিলি বন্ধু, পাট্টার আবেদন সহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধার জন্য আবেদন জমা পড়েছে।


    উল্লেখ্য, বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা চালু করার অন্যতম উদ্দেশ্য হল অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরতদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান। যাঁদের মাসিক পারিবারিক আয় সাড়ে ছ’ হাজার টাকা, তাঁরাই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেন। যার ফলে আবেদনকারী ভবিষ্যতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে হাসপাতালে ভর্তির ফি, দুর্ঘটনাজনিত খরচ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সহায়তা প্রদান করবে। 


    জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানা গিয়েছে, নবম দুয়ারের সরকারে নদীয়া জেলায় ৭ লক্ষ ৫৫ হাজার মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে শিবিরে এসেছিলেন। নাকাশিপাড়া ব্লকে সর্বাধিক ৮০ হাজার মানুষ দুয়ারে সরকার শিবিরে এসেছিলেন। কালীগঞ্জ ব্লকে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৫৮ হাজার শিবিরে হাজির হয়েছিলেন। এছাড়াও চাকদহ, চাপড়া, করিমপুর-২, কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলোতে ফুটফল সবচেয়ে বেশি।‌


    উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি থেকে নদীয়া জেলা সহ গোটা রাজ্যে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু হয়। জেলাজুড়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিবির করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৩২ শতাংশ মোবাইল ক্যাম্প। 


    কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, মানুষকে পরিষেবা প্রদান করতে সর্বদা তৎপর। তাই মানুষের দুয়ারে গিয়ে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।‌ তাই বহু মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।’ কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘দুয়ারে সরকার শিবিরে স্বজনপোষণ হয়েছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)