নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পরনে সাদামাটা জামাকাপড়। দু’জনেরই কোলে দুধের শিশু। রবিবার এভাবেই রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন দুই মহিলা। জনসমক্ষে ঘোরার সময় এদের দিকে কারোর নজরই পড়েনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিস দুই মহিলাকে কড়া জিজ্ঞাসাবাদ করায় কৌতুহল বাড়ে স্থানীয়দের। এরপর মাদক সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করতেই মাথায় হাত একাংশের। শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এমন সাদামাটা চেহারার দুই মহিলাকে ৬০০ গ্রাম ব্রাউন সুগার সহ গ্রেপ্তার করেছে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ(এসওজি) ও খালপাড়া ফাঁড়ির পুলিস। উদ্ধার হওয়া ব্রাউন সুগারের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাবানা খাতুন এবং মোমিনা খাতুন। তাদের বাড়ি মাটিগাড়া এবং মুর্শিদাবাদে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা সম্পর্কে দুই বোন। ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত করছে পুলিস। শহরে মাদক কারবারিদের আনাগোনায় যে রাশ টানা যায়নি তা এই ঘটনায় ফের প্রমাণিত।
যদিও, শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি(পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা দুই মহিলাকে ৬০০ গ্রাম ব্রাউন সুগার সহ গ্রেপ্তার করেছি। ওই ব্রাউন সুগারের মূল্য আনুমানিক এক কোটি টাকা। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।
পুলিস সূত্রে খবর, এই দুই মহিলা মুর্শিদাবাদ থেকে ব্রাউনসুগার নিয়ে এসে শিলিগুড়িতে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঘোরাঘুরি করছিল। পুলিসের কাছে সে খবর আসে। তারপরই একাধিক এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিস। এসওজি ও পুলিস ঝঙ্কারমোড় সংলগ্ন টিউমলপাড়ায় অভিযানে নামে। সেখানে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখেই পুলিসের সন্দেহ হয়। প্রথমে দুই মহিলাকে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে তল্লাশি করতেই মেলে ব্রাউন সুগার। পুলিসের চোখে ধুলো দিতেই তারা দুজনে দুটি শিশুকে কোলে নিয়ে এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। পুলিস জানতে পেরেছে, টিউমলপাড়া এলাকায় ওই ব্রাউন সুগার হাতবদল হওয়ার কথা ছিল। তবে হাতবদলের আগেই পুলিসের জালে ধরা পড়ে যায় দু’জন। পুলিসের দাবি, ওই দুই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে এই পাচারের কাজে যুক্ত থাকতে পারে। কোন চক্রের সঙ্গে ওই দুই বোন যুক্ত ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। মুর্শিদাবাদের কোনও গ্যাংয়ের সঙ্গে এই দুই মহিলা জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে পুজোর সকালে মাদক হাতবদলের ছক কষেছিল এই দুই মহিলা। শহরে কখনও যুবক, কখনও মহিলাদের শিখণ্ডি করেই মাদক পাচারের কারবার চালাচ্ছে মাফিয়ারা। তরুণ সমাজের মধ্যে মাদকের বিষজাল ছড়িয়ে দিতে কসুর করছে না তারা। তবে পুলিসি তত্পড়তায় এ যাত্রায় নিজেদের কাজ হাসিল করতে ব্যর্থ মাফিয়ারা।