হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পুলিসি প্রহরায় যোগেশচন্দ্র কলেজে ৩টি সরস্বতী পুজো
বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সরস্বতী পুজো ঘিরে বেনজির ছবি দক্ষিণ কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজে। মূল গেটের বাইরে পাহারায় পুলিস। এ দৃশ্য কলেজে নির্বাচন হলে সাধারণত দেখা যায়। এ বছর সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যেও এই ব্যবস্থা দেখা গেল যোগেশচন্দ্রতে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এদিন পুলিসি ব্যবস্থার আয়োজন হয়েছিল কলেজে। গেটের ভিতর দু’টি পুজো হয়েছে। একটি আইন কলেজের পড়ুয়াদের। অন্যটি ডে কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়ের। তিনি ছোট একটি মূর্তি চেয়ারে রেখে মেঝেতে বসে পুজো করেছেন। এছাড়া কলেজের পাশের গলিতে মঞ্চ তৈরি করে ডে কলেজের পড়ুয়ারা পুজো করেন। দুপুরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কলেজে গেলে তাঁকে ঘিরে আইন কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ অভিযোগ জানান।
আইন ও ডে কলেজের ক্লাস প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের এই ক্যাম্পাসে হয়। জানা গিয়েছে, এখানে কারা পুজো করবে সেই নিয়ে বচসার সূত্রপাত। আইন কলেজের এক পড়ুয়া হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। তারপর আদালতের নির্দেশে পুলিসি প্রহরায় পুজোর আয়োজন হয়। গেটের বাইরে বেঞ্চে সশস্ত্র পুলিস বাহিনী মোতায়েন ছিল। পরিচয়পত্র দেখিয়ে পড়ুয়াদের ভিতরে ঢুকতে হয়েছে। অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে কলেজের সামনে ‘বিজেপির দালাল’ লেখা পোস্টার টাঙান পড়ুয়াদের একাংশ। শিক্ষামন্ত্রী ও কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের সাংসদ মালা রায় ঘটনাস্থলে গেলে পড়ুয়াদের কয়েকজন বিক্ষোভ দেখান। এক ছাত্রী শিক্ষামন্ত্রীর সামনে কেঁদে ফেলে বলেন, ‘ভয়ে আছি।’ এরপর চার পড়ুয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী। সাংসদ বলেন, ‘পড়ুয়াদের বক্তব্য শুনব। কিন্তু পুজোর দিন উই ওয়ান্ট জাস্টিস শুনব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো নিয়ে যেভাবে ভাবেন, আর কেউ ভাবেন না। আমরা দু’টি পুজোতেই এলাম। ছয় বা সাত তারিখ সকালে কলেজে এসে কথা বলব। ডে কলেজের পড়ুয়ারা শান্তি বজায় রাখার জন্য আলাদা পুজো করেছেন। আমরা কখনওই চাইব না পড়ুয়ারা রাজনীতির শিকার হন।’
পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বহিরাগতরা কলেজে ঢুকছে। সাব্বির আলি নামে তৃণমূলের এক নেতার নাম উল্লেখ করে পড়ুয়াদের অভিযোগ, তিনি এসবের পিছনে রয়েছেন। যদিও সাব্বির এদিন ডে কলেজের পুজোয় হাজির ছিলেন। তৃণমূলের ছাত্র-যুব নেতারা তার প্রশংসাও করেছেন। অন্যদিকে, কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সব কথা বলব। আমার অন্য রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে কিন্তু কলেজের মধ্যে আমি সেসব করি না।’