• পুলিস পরিচয়ে সোনার অলঙ্কার হাতানোর অভিযোগ জোড়াসাঁকোয়
    বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুলিসের পরিচয় দিয়ে সোনা ও হীরের গয়না হাতানোর অভিযোগ উঠল জোড়াসাঁকোয়। এলাকার তারাচাঁদ দত্ত স্ট্রিটে তল্লাশির নামে ব্যাগ থেকে সমস্ত গয়না নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। দিনেদুপুরে পুলিস সেজে দুই ব্যক্তি কীভাবে এই ঘটনা ঘটাল তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে জোড়াসাঁকো থানা। সিসি ক্যামেরা দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।


    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে পার্ক স্ট্রিটের একটি জুয়েলারি দোকানের কর্মী জোড়াসাঁকো এলাকায় অলঙ্কার তৈরির ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে সোনা নিয়ে আসেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খরিদ্দারের বাড়িতে সোনার অলঙ্কার পৌঁছেও দেন। ৩০ জানুয়ারি ওই সোনার দোকানের কর্মী সোনার হার, হীরের লকেট সহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে দু’টোর পর জুয়েলারি শপ থেকে বের হন। এই সমস্ত সামগ্রীর কাজ করাতে তিনি জোড়াসাঁকো এলাকার কেষ্ট দাস পাল রোডে আসছিলেন। বেলা আড়াইটের পর মুনলাইট সিনেমার সামনে বাস থেকে নামেন। তাঁর কাছে থাকা ব্যাগে সোনার সামগ্রীগুলি ছিল। হঠাৎ করে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবক এগিয়ে আসে। নিজেদের পুলিস কর্মী পরিচয় দিয়ে তারা জানায়, এলাকায় তল্লাশি চলছে। তাদের দায়িত্বে রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থাকা ব্যাগ চেকিং করার। সোনার দোকানের কর্মীকে তারা সাইডে আসতে বলে। অভিযোগকারীর দাবি, তাঁকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের লাগোয়া একটি গলিতে ঢোকানো হয়। দুই অভিযুক্ত তল্লাশির নামে ব্যাগটি নিয়ে নেয়। ব্যাগে সোনা দেখে ভুয়ো দুই পুলিস কর্মী জানতে চায়, এগুলি তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন? ওই কর্মী পার্ক স্ট্রিটের দোকানের কথা বলে এবং এই সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখায়। তারপরেও অভিযুক্তরা বলে এগুলি সব জাল। ওই ব্যাগটি ‘স্যার’কে দেখানোর নাম করে কিছুটা দূরে নিয়ে যায় দুই জালিয়াত। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে তারা ব্যাগটি ওই কর্মীর হাতে তুলে দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। পুলিসের ভয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান অভিযোগকারী। কিছুটা যাওয়ার পর ব্যাগ খুলে দেখেন, তাতে থাকা সোনার অলঙ্কার নেই। তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারকের পাল্লায় পড়ে এগুলি খুইয়েছেন। জোড়াসাঁকো থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। 


    তদন্তে নেমে পুলিস ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। দেখা হচ্ছে তারা কোনও  মোটরবাইকে ছিল কি না। আর পালানোর সময় কীভাবে গেল। তদন্তকারীরা জানতে পারছেন, বছর দুই আগে নাকা চেকিংয়ের নামে  জোড়াসাঁকো ও  গিরিশ পার্ক এলাকায় একই কায়দায় বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সোনার অলঙ্কার ও বাট, নগদ টাকা হাতানো হয়। ওই গ্যাংটি বাইক বা স্কুটিতে এই ধরনের অপরাধ করে বেড়াত।  দুষ্কৃতী দলের একজন নিজেকে অফিসার বলে পরিচয় দিত। সেই গ্যাংয়ের কোনও সদস্য জামিন পেয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, নাকি নতুন কোনও চক্র এর পিছনে রয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।    
  • Link to this news (বর্তমান)