নিজস্ব প্রতিনিধি,বরানগর: দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় হোর্ডিং আছে তিনশো’র মতো। তার মধ্যে অর্ধেকের বেশি বেআইনি। বিরোধীদের কোনও অভিযোগ নয়। এ তথ্য খোদ পুরসভার।
পুরসভার একটি সার্ভে করেছিল। সার্ভে রিপোর্টেই এ তথ্য উঠে এসেছে। তার উপর কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিয়েছেন কাউন্সিলারদের অনেকে। তাঁদের দাবি, এর থেকে বেশি হোর্ডিং রয়েছে। সার্ভে ঠিকঠাক হয়নি। সঠিকভাবে হলে প্রকৃত তথ্য উঠে আসত। এরই মধ্যে পুরসভা জানাল, বেআইনি হোর্ডিং রুখতে কড়া পদক্ষেপের পরিকল্পনা হয়েছে। প্রতিটি হোর্ডিংয়ে দেওয়া হবে কিউআর কোড। যে হোর্ডিংয়ে কোড থাকবে না তা অবৈধ বলে চিহ্নিত করা হবে। আর কেউ অবৈধভাবে কোড ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত চলবে নজরদারি।
দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার দমদম রোড, যশোর রোড, ভিআইপি রোড ছাড়াও লেকটাউন, বাঙুর, সাতগাছি, নাগেরবাজার সহ বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় বেআইনি হোর্ডিং আকাশ প্রায় ঢেকে দিয়েছে। রাস্তার ডিভাইডারেও বিজ্ঞাপনের বোর্ড। চারদিকজুড়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও পুরসভার কোষাগারে কিন্তু টাকা ঢুকছে না। দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে বিজ্ঞাপনের ভিউ ট্যাক্স বাবদ পুরসভা আয় করেছিল ২২ লক্ষ ৩২ হাজার ৪৯৩ টাকা। সেটিই দক্ষিণ দমদমের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয়। এরপর হোর্ডিং বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে আয়। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে এই খাতে আয় হয়েছিল ১৫ লক্ষ ২২ হাজার ৭৬৮ টাকা। পরের বছর এ খাতে রোজগার কিছুটা বেড়ে হয়েছিল ১৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৮৪। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত আয় হয়েছে ১৪ লক্ষ টাকা।
সম্প্রতি বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে বিধাননগর পুরসভায় তীব্র বিতর্ক হয়। তারপর দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ কিছুটা নড়েচড়ে বসে। গত মাসে সার্ভে হয়। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, শহরে হোর্ডিং রয়েছে ২৯৫টি। তার মধ্যে বৈধ ১২৫। অবৈধের সংখ্যা বেশি। ১৭০টি বেআইনি হোর্ডিং রয়েছে। কিন্তু পুরসভার কাউন্সিলারদের দাবি, ‘সার্ভে অসম্পূর্ণভাবে হয়েছে। এই সংখ্যার বাইরে কয়েকগুণ বেশি হোর্ডিং রয়েছে শহরে।’ এ নিয়ে বোর্ড মিটিংয়েও একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এরপরই সিদ্ধান্ত, অবৈধ হোর্ডিং রুখতে কিউআর কোড ব্যবহার হবে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত বলেন, ‘এবার থেকে শহরের প্রতিটি হোর্ডিংয়ে পুরসভার দেওয়া কিউআর কোড লাগানো বাধ্যতামূলক। কোড স্ক্যান করলে যাবতীয় তথ্য মিলে যাবে। এই কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত কার্যকর হবে।’ তিনি জানান, এর ফলে কিউআর কোড না থাকা হোর্ডিং বেআইনি বলে চিহ্নিত হবে সহজেই। কেউ ভুয়ো কোড ব্যবহার করছে কি না জানতে নিয়মিত নজরদারিও চলবে। কোনও অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।