নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: নৈহাটিতে তৃণমূল কর্মী খুনের জেরে বিজেপির কার্যালয় ও দলীয় কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল। রবিবার সেই এলাকা পরিদর্শন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এরপর শাসক ও বিরোধী নেতাদের বয়ান ঘিরে জোর উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, এই খুনের ঘটনায় ধৃত অক্ষয় গন্ডকে রবিবার বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজেশ সাউ ওরফে ঘাউরা এখনও অধরা। এমনকী, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে থাকা বাকি পাঁচ অভিযুক্ত এখনও গ্রেপ্তার না হওয়ায় শাসকদলের অন্দরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেলে নৈহাটি গোয়ালাপাড়া পার্ক লাগোয়া জোড়াবাড়ির সামনে তৃণমূল কর্মী সন্তোষ যাদবকে টোটো থেকে নামিয়ে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর নৈহাটির গৌরীপুর এলাকায় বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় সিং ভবন ছাড়াও বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয় বলেও অভিযোগ। রবিবার আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং, বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র সহ বিজেপি নেতৃত্ব। পথে তাঁদের কালো পতাকা দেখানো হয়। গৌরীপুর থেকে তাঁরা হেঁটে লালদিঘি মোড়ে সিং ভবন পর্যন্ত যান। এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুকান্তবাবু বলেন, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে। আগের পুলিস কমিশনার সত্যি কথা বলেছেন বলে ওনাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। ভাটপাড়ার বিজেপি কর্মী প্রিয়াঙ্গু পান্ডেকে খুন করা হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। বর্তমান পুলিস কমিশনারের উপর আমাদের আস্থা নেই। এই খুনের কাণ্ডে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের কথায় যারা বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করছে, তাদের নাম খাতায় লিখে রাখছি। আমরাও হিসেব নেব। পাল্টা তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, গুন্ডামি ছাড়া বিজেপি আর কিছুই জানে না। ওদের লোকেরা আমাদের কর্মীকে খুন করেছে। আমরা বিজেপির মতো খুনের রাজনীতি করি না। জনরোষে বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সুকান্তবাবুর পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে, সুকান্ত মজুমদার খুনিদের প্রশ্রয় দিতে এসেছিলেন। তাহলে উনি কি খুনিদের মদতদাতা? নৈহাটির মানুষ এটা নিয়েই এখন আলোচনা করছেন।