ফিরলেন বিশেষভাবে সক্ষম নিখোঁজ যুবক, স্বস্তি পেল লিলুয়ার পরিবার
বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বাড়িতে সরস্বতী পুজোর তোড়জোড় চলছিল। পরিবারের সদস্যদের অলক্ষ্যে আচমকা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান লিলুয়ার বাসিন্দা বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক। শেষবার তাঁকে দেখা যায় লিলুয়া রেল স্টেশনে। চরম উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের মধ্যেই অসহায় বাবা-মায়ের ভরসা হয়ে ওঠে পুলিস। রেল পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতভর চলে খোঁজ। অবশেষে এদিন সকালে শহরের এক রাস্তায় ওই যুবককে বসে থাকতে দেখেন টহলরত পুলিসকর্মীরা। তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় পরিবারের কাছে। সন্তান বাড়ি ফেরায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পরিবারটি।
লিলুয়ার বাসিন্দা সঞ্জীব চন্দের বছর আঠাশের ছেলে রোহম ছোট থেকেই শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি চলছিল। বাবার সঙ্গে বাজার করে বাড়িতে ফেরে রোহম। কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, সে বাড়িতে নেই। তন্নতন্ন করে এলাকায় খোঁজ শুরু করে আতঙ্কিত পরিবার। স্থানীয়দের কয়েকজন সঞ্জীববাবুকে জানান, রোহমকে লিলুয়া স্টেশনের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে লিলুয়া স্টেশনে গিয়ে রেল পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সঞ্জীববাবু। স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে হাওড়া-বর্ধমান লোকালের ভেন্ডার কামরায় উঠতে দেখা যায় ওই যুবককে। সঞ্জীববাবুর কথায়, ‘এরপর হাওড়ায় জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু সেভাবে তাদের তৎপরতা দেখিনি। তাই বাধ্য হয়ে লিলুয়া থানায় মিসিং ডায়েরি করি।’
মিসিং ডায়েরি পেতেই তৎপরতা শুরু হয় লিলুয়া থানায়। বর্ধমান পর্যন্ত প্রতিটি স্টেশনে রেল পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে লিলুয়া থানার পুলিস। পাশাপাশি শহরজুড়ে শুরু হয় খোঁজ। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে হাওড়ার ব্যাঁটরা এলাকায় রোহমকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন টহলরত পুলিস কর্মীরা। শুধু নামটুকুই বলতে পারছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। পরিবারের কাছে রোহমকে ফিরিয়ে দিতেই স্বস্তি ফেরে পুলিসেরও। থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘যেহেতু ওই যুবক বিশেষভাবে সক্ষম, তাই তিনি কোন স্টেশনে নেমে কীভাবে এখানে চলে এসেছেন, তা বলা মুশকিল। তবে রেলপথেই তিনি যাতায়াত করেছেন।’ রোহমের বাবা সঞ্জীববাবু বলেন, ‘হাওড়া জিআরপির সহযোগিতা না পেয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হয়েছিলাম। প্রতি মুহূর্তে লিলুয়া থানার পুলিস আমাদের পাশে থেকেছে। পুলিসকে ধন্যবাদ।’ নিজস্ব চিত্র