• গ্রামের নতুন পিচ রাস্তা ঘিরে আর্থিক উন্নতির স্বপ্ন চাষিদের
    বর্তমান | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: এক বছর আগেও চাষের জমিতে ঢুকতে গেলে কাদা মাড়িয়ে যেতে হতো। কৃষকরা রাস্তায় নেমে কাদায় পা দিয়ে যদিও বা যেতে পারতেন, কিন্তু ট্রাক্টর বা লরি কিছুই জমি যেতে পারত না। ফলে, সমস্যায় পড়তেন চাষিরা। উৎপাদিত ফসল বাড়িতে আনার খরচও অনেকটা বেড়ে যেত। বলাগড়ের মীরডাঙা থেকে বেহুলা বাঁধ পর্যন্ত রাস্তার এই বেহাল দশা কৃষকদের তো বটেই, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনও ওষ্ঠাগত করে তুলেছিল। বর্তমানে ওই দুই জনপদকে জুড়ছে পিচ রাস্তা। প্রায় পৌঁনে দুই কিমি রাস্তার অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। সমৃণ পিচ রাস্তাকে ঘিরে আর্থিক উন্নতির স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। রাস্তা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা এখন উন্নয়নের স্বপ্নে বিভোর। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি উদ্যোগ থাকলেও রাস্তা তৈরির কাজ সহজ হয়নি। সেই সমস্যার সমাধানের পথে তৈরি হয়েছে একটি নজির। বলাগড়ের গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা ওই পৌঁনে দুই কিমি রাস্তার একটি অংশ দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা। ফলে, একদিকে সরকারি ও অন্যদিকে নাগরিক উদ্যোগ, দু’য়ে মিলেই খুলেছে উন্নয়নের পথ। ঘটনাকে ঘিরে খুশি বলাগড়ের বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস। তিনি বলেন, ওই নতুন রাস্তা একটি বিশেষ উদ্যোগ। তেমনই ওই পথ উন্নয়নের পথ খুলে দেবে, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। প্রতিদিন এই রাস্তাকে একটু একটু করে দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে বাড়তে দেখেছেন মীরডাঙা ঘোষপাড়ার শম্ভুচরণ ঘোষ ও মুসলিমপাড়ার আব্দুল মালেক। দু’জনেই জমিদাতা। তাঁরা বলেন, কাদা পেরিয়ে যাওয়ার নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে, এই ভেবেই আমরা খুশি। এতে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে কয়েক হাজার কৃষক উপকৃত হবেন। জমি থেকে ফসল পরিবহণের খরচ কমবে। আর্থিক উন্নতি হবে। একই মত কায়েম শেখ, ইনসান শেখের মতো বাকি জমিদাতাদেরও। গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ এখন পাশের গ্রাম সংসদ সারদানগরের পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি বলেন, পাড়ায় সমাধান প্রকল্পে ওই রাস্তাকে আমরা নথিভুক্ত করেছিলাম। দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন পিচের রাস্তার কাজ প্রায় শেষ। নাগরিকরা, সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে রাস্তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছেন। উন্নয়নের জন্য এই যুগলবন্দি বেনজির।


    মীরডাঙা থেকে বেহুলার বাঁধ পর্যন্ত এলাকায় বিঘার পর বিঘা চাষের জমি আছে। যা থেকে প্রায় এক হাজার কৃষক পরিবারের অন্নসংস্থান হয়। আবার, বেহুলা বাঁধের কাছে ঘনবসতি রয়েছি। সকলের কাছেই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ১,৭৫০ মিটার রাস্তা। কারণ, বর্ষাকালে তো বটেই, বছরের বেশিরভাগ সময় রাস্তায় পাঁক জমে থাকত। সেই বেহাল দশার বদলকে ঘিরে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় মানুষ ও কৃষকরা।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)