• বাড়ি ফিরবেন জলদি, সকালেই ফোনে ছেলেকে জানান ফরজেম
    এই সময় | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, বহরমপুর: প্রতি দিনের মতো রবিবার সকালেও বাড়িতে ফোন করেছিলেন ফরজেম শেখ। ম্যানহোলে নামার আগে জরুরি কথা সেরে নিচ্ছিলেন পরিবারের সঙ্গে। তার মাঝেই জানান, দিন চারেকের মধ্যে ফিরবেন বাড়িতে, মুর্শিদাবাদের লালগোলায়। কিন্তু ফোন রাখার পরেই অভিশপ্ত ম্যানহোলে নেমে দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তাঁর। বাড়ি আর ফেরা হয়নি। টিভি দেখে দুর্ঘটনার কথা জানতে পারে পরিবার।

    বানতলায় লেদার কমপ্লেক্সের ম্যানহোলে নেমে সাফাইয়ের কাজ করতে গিয়ে যে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে দু'জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালগোলায়। তাঁদেরই এক জন ফরজেম। তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'বাবা পাইপ লাইনের কাজ করত। সকালেই ফোনে কথা হচ্ছিল। বলছিল বাড়ি আসবে। তার পরেই এমন দুর্ঘটনা। ভাবতেই পারছি না।' তাঁর স্ত্রী আশরাফুলনেসা বলেন, 'কাজে যেতে নিষেধ করেছিলাম বার বার। তা–ও গিয়েছিল। দেহটা আগে বাড়ি ফেরাতে চাই।'

    ম্যানহোলে নেমে মৃত্যু হয়েছে লালগোলার হাসিবুর রহমানেরও। মাস দু'য়েক আগে লালগোলা থেকে কলকাতায় পাইপ লাইনের কাজের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। পরিবারে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও এক মেয়ে। দীর্ঘ দিন ধরেই ম্যানহোলের কাজ করতেন হাসিবুর। তাঁর বাড়িতে এখন কান্নার রোল। স্ত্রী নার্গিস খাতুন বলেন, 'আজকে আর ফোনে কথা হয়নি। পরিচিত একজনকে ফোন করে জানতে পারি, দুর্ঘটনার কথা। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। সংসারের একমাত্র রোজগেরেই ছিল আমার স্বামী। কী করে চলবে, তা আল্লাই জানে।'

    জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, 'খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওই দুই পরিবার যাতে সরকারি ভাবে সাহায্য পায়, তার জন্য চেষ্টা করা হবে। এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই পরিয়ায়ী শ্রমিকের কাজ করেন।'

  • Link to this news (এই সময়)