• সুপ্রিম নির্দেশ, তবু ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং
    এই সময় | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: ম্যানহোল বা নিকাশি নালা সাফাইয়ের ক্ষেত্রে ২০১৩–য় বিশেষ আইন এনেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, ম্যানহোল সাফাইয়ে মানুষকে ব্যবহার করা যাবে না। যদিও, কলকাতার মতো মেট্রো শহরে যে এখনও সেই নিয়ম কার্যকর হয়নি তা স্পষ্ট, বরিবার বানতলায় তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায়। শুধু বানতলা নয়। বছর চারেক আগে কলকাতা পুরসভার আওতাধীন কুঁদঘাটে ম্যানহোলে তলিয়ে চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।

    গত বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট ম্যানহোল সংক্রান্ত মামলায় জানিয়েছে, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি, হায়দরাবাদ এবং কলকাতার পুর কমিশনারকে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে হবে। রিপোর্ট জানাতে হবে, কবে থেকে ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং’ বা মানুষ নামিয়ে ম্যানহোল সাফাই তারা বন্ধ করেছে। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ ফেব্রুয়ারি। তার আগে বানতলার এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রাজ্য। ম্যানহোল সাফাইয়ে নেমে একাধিক মানুষের মৃত্যুর পরেই ২০১৩–য় আইন তৈরি করে তা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু, তারপরেও এতে রাশ টানা যায়নি।

    যদিও কলকাতার পুর কমিশনার ধবল জৈনের দাবি, ‘শহরে নিকাশি নালা সাফাইয়ের ক্ষেত্রে বহু বছর ধরেই জেটিং মেশিন বা জেটিং কাম সাকশন মেশিন ব্যবহার করা হয়। কারণ, মানুষ নামিয়ে ম্যানহোল সাফাইয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’ কলকাতা পুরসভায় এই রকমের ৩২টি অত্যাধুনিক যন্ত্র রয়েছেে।

    তবে, কলকাতা কমিশনার এমন দাবি করলেও পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন, ‘যদি কমিশনারের দাবি সত্যি বলে ধরে নিই তাহলে বানতলায় কেন লোক নামানো হয়েছিল?’ পুরসভার কর্তাদের পাল্টা বক্তব্য, ওই কাজটির সঙ্গে পুরসভার কোনও সম্পর্ক নেই। বানতলার দায়িত্ব কেএমডিএর তরফে দেওয়া হয়েছিল একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। ওই সংস্থার কর্মীরা জানাচ্ছেন, চার ফুটের বেশি উচ্চতার ম্যানহোল যেখানে সেখানে মেশিন ঠিকমতো কাজ করে না। ফলে, সাফাইকর্মীদের কাজে লাগানো হয়। তবে, এক্ষেত্রে যে সংস্থা শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাবে তাদের সুরক্ষার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

    স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরেও কেন ম্যানহোল সাফাইয়ে নামানো হলো শ্রমিকদের? পুরমন্ত্রী তথা কেএমডিএর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের দাবি, ‘নীচে নামলে আমার কিছু হবে না। এই ধারণা থেকে অমেক শ্রমিক নীচে নেমে পড়েন। তখনই বিপদ হয়।’ যা ঘটছে তা কী করে ঘটল সেই তদন্ত লোকাল থানা করছে—এমনটাই জানিয়েছেন ফিরহাদ। পাশাপাশি কেএমডিএর তরফেও তদন্ত হবে। মেয়র আরও জানান, এই ঘটনায় যে বা যারা দায়ী, কাউকে রেয়াত করা হবে না। তদন্তে যাদের দোষ উঠে আসবে তাদের আইন মেনে শাস্তি হবে।

  • Link to this news (এই সময়)