মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত কাছের পাত্র সাংসদ দেব। তাই তো তাঁর কথায় সাড়া দিয়ে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। যা কেন্দ্রের করার কথা ছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সেসব দেখেছে বাংলার মানুষ। সেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। এবার দেবের সাংসদ এলাকার জন্যই বড় উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার সে কথা চিঠি লিখে অভিনেতা–সাংসদকে সে কথা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠি হাতে পেয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেবও বলে সূত্রের খবর।
এদিকে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তিনবারের সাংসদ দীপক অধিকারী । গত ৩০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ওই চিঠি দেবকে পাঠিয়েছেন। সরস্বতী পুজোর দিন ২ ফেব্রুয়ারি সেটি প্রকাশ্যে এসেছে। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ দেবকে লিখেছেন, ‘জানলে খুশি হবে, আমাদের সরকার কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালকে ৩০ বেড থেকে ৫০ বেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কাজে ব্যয় হবে ২৪ কোটি টাকা। মানুষকে আরও উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ করলাম। রাজ্য সরকারের এই সদর্থক ভূমিকার কথা তুমি এলাকার মানুষের নজরে আনবে, আশা রাখি।’ এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে কেশপুরে।
অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই গ্রামীণ হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ছিল ৩০টি। আর হাসপাতাল ভবনের অবস্থা হয়ে উঠেছিল ভগ্নপ্রায় ও জরাজীর্ণ। তাই এখানে শয্যাসংখ্যা বাড়ানো থেকে শুরু করে কেশপুর হাসপাতালের সংস্কারের দাবি উঠছিল। তা নিয়ে সাংসদ দেব থেকে স্থানীয় বিধায়ক শিউলি সাহাও বারবার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আর এবার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ দেবকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন রাজ্য সরকারের উদ্যোগের কথা। এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘সম্পূর্ণ নতুন একটি ভবন তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নতুন ইমারজেন্সি ওটি কমপ্লেক্স, লেবার রুম–সহ ৫০টি বেড রাখার পরিকল্পনা হচ্ছে। কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এখন শুধু নর্ম্যাল ডেলিভারি হয়। নতুন ভবন তৈরি হলে সিজারের ব্যবস্থার প্রস্তাব দেব।’
এছাড়া ২০১৬ সালের পর থেকে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ভগ্ন অবস্থার বদল শুরু হয়। পরিষেবারও উন্নতি হয়েছে। তবে আরও কিছু কাজ দরকার ছিল। এবার তা হতে চলেছে বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। কেশপুর হাসপাতালে আউটডোর এবং ইন্ডোর দুই পরিষেবার উপর চাপ বেড়ে চলেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় এলাকাবাসী ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে খুব শীঘ্রই নতুন ভবনের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে।